
রাজস্থানের একটি গ্রামে এক ব্যক্তির কাছে ১৯টি উট ছিলো। একদিন সেই ব্যক্তির মৃত্যু হলো। মৃত্যুর পূর্বে তিনি উইল করে গিয়েছিলেন, তার মৃত্যুর পর সেই উইলটি পড়া হলো। সেই উইলে লেখা ছিলো — “তার মৃত্যুর পরে তার উনিশটি উটের মধ্যে অর্ধেক তার ছেলেকে, তার একের চতুর্থাংশ তার মেয়েকে, উনিশটি উটের মধ্যে পঞ্চম ভাগ তার চাকরকে দেওয়া হবে।”
আত্মীয়স্বজনরা খুব চিন্তায় পড়ে গেলো যে, এই ভাগ কি করে করা যাবে?
উনিশটি উটের অর্ধেক অর্থাৎ একটি উটকে দু’ভাগ করতে হবে, তাহলে তো উটই মরে যাবে । আচ্ছা, একটা উট না হয় মারাই গেলো, এরপর আঠারোটি উটের এক চতুর্থাংশ — সাড়ে চার — সাড়ে চার — তারপর ?
সকলেই খুব চিন্তার মধ্যে ছিলো। তখন সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে পাশের গ্রাম থেকে এক বুদ্ধিমান ব্যক্তিকে ডাকিয়ে আনলেন।
সেই বুদ্ধিমান ব্যক্তি নিজের উটে চড়ে এসেছিলেন। তিনি সব কথা শুনে নিজের বুদ্ধি প্রয়োগ করলেন এবং বললেন, এই উনিশটি উটের সঙ্গে আমার উট মিলিয়ে ভাগ করে দাও।
সবাই ভাবতে লাগলো — যিনি মারা গেছেন, তিনি এক পাগল যিনি এমন উইল করে চলে গেছেন, এখন এই দ্বিতীয় পাগল এসেছেন, যিনি বলছেন — তার উটটি মিলিয়ে ভাগ করে দিতে। তবুও সবাই চিন্তা করে দেখলো, কোনো উপায় যখন নেই, এনার কথা শুনেই দেখা যাক।
১৯ + ১ = ২০
২০ র অর্ধেক ১০টি উট ছেলেকে দেওয়া হলো।
২০ র ১/৪ = ৫টি উট মেয়েকে দেওয়া হলো।
২০ র ১/৫ = ৪টি উট চাকরকে দেওয়া হলো।
১০ + ৫ + ৪ = ১৯
যে একটি উট রয়ে গেলো, সেই উটটি বুদ্ধিমান ব্যক্তির ছিলো । সে সেই উটটি নিয়ে নিজের গ্রামে ফিরে গেলো।
এইপ্রকারে একটি উট যোগ করাতে ১৯ টি উটের ভাগ সুখ, শান্তি এবং আনন্দের সঙ্গে হয়ে গেলো।
এমনই আমাদের জীবনেও উনিশটি উট আছে।
৫ জ্ঞানেন্দ্রিয় — চোখ, নাক, জিভ, কান, ত্বক
৫ কর্মেন্দ্রিয় — হাত, পা, জিভ, দাঁত, পায়ু
৫ প্রাণ — প্রাণ, অপান, সমান, ব্যান, উদান
আর
৪ অন্তঃকরণ — মন, বুদ্ধি, চিত্ত, অহংকার
সবমিলিয়ে এই উনিশটি উট।
সারাজীবন মানুষ এই উনিশটি উটের ভাগ করতেই বিভ্রান্ত হয় । যতক্ষণ না তাতে “মানবিকতা” উটটিকে মেলানো হয় ততক্ষণ প্রকৃত সুখ, শান্তি, সন্তুষ্টি আর আনন্দের প্রাপ্তিও হয় না।
এই হলো উনিশটি উটের কাহিনী।