Friday, April 26, 2024
Homeরম্য গল্পসরস গল্পযেমন রোগ তেমন দাওয়াই - নাসিরুদ্দিন হোজ্জা

যেমন রোগ তেমন দাওয়াই – নাসিরুদ্দিন হোজ্জা

এক দম্পতি। ভীষণ স্বাপ্নিক তারা। এই দিবা স্বপ্নের ঘোরে থাকা দম্পতির প্রতিবেশী আবার আর কেউ নয়, স্বয়ং নাসিরুদ্দীন হোজ্জা। একদিন এই দম্পতি দিবা স্বপ্নকে প্রায় বাস্তব বানিয়ে ফেলল।

স্বামী বলছিলঃ টাকা পেলেই একটা দুধেল গাই কিনবো।

স্ত্রী বললো : সে দারুণ হবে গো। ম্যালা ভাণ্ডও লাগবে, যাই দামদর করে কিনে ফেলিগে। এসব ব্যাপারে দেরি করা কোন কাজের কথা না। যেই ভাবা সেই কাজ। বউ বাজারে যেয়ে পাঁচখানা পেল্লায় ভাণ্ড কিনে আনে।

স্বামী সুধায় (জানতে চায়) : কি কিনলে?

স্ত্রী : পাঁচখানা ভাণ্ড। একটায় দুধ রাখবো, একটায় ঘোল, একটায় মাখন আর একটাতে ঘি।

স্বামী : আর একখানা ভাণ্ড যে থাকলো, ওতে কি হবে?

স্ত্রী : ইয়ে, এই আর কি, ধর যদি দুধ বেঁচে যায়, তো আমার মায়ের বাড়িতে দেব।

স্বামী : কি বললে, মায়ের বাড়িতে দেবে? কি সব্বোনাশ। এভাবে তো আমার সংসার লাটে উঠবে। তা, বলি চুরি করে কতদিন ধরে এভাবে মায়ের বাড়িতে দুধ পাঠানো হচ্ছে। আমি জানি না, আর আমার সংসারের লোপাট হয়ে যাচ্ছে!

স্ত্রী : আমি গরুকে ঘাস খাওয়াব, দুধও দুয়াবো। আর মায়ের বাড়িতে এক ভাণ্ড দুধ পাঠাতে পারব না।

স্বামী : আমি গাঁটের পয়সা খরচ করে গরু কিনবো, আর বজ্জাত মেয়েমানুষ মায়ের বাড়িতে দুধ পাঠাবে! আজ যখন হাতেনাতে চুরি ধরে ফেলেছি তখন তোরই একদিন কি আমার একদিন।

এই বলে বউকে মারতে উদ্যত হয়। তাদের চিৎকার চ্যাঁচামেচি শুনেই নাসিরুদ্দীন হোজ্জা এগিয়ে আসে।

নাসিরুদ্দীন হোজ্জা : কিহে এই সাতসকালে ঝগড়া বাঁধিয়েছ কেন তোমরা?

স্বামী : কাণ্ড দেখ না ভাই শয়তান মেয়ে লোকটার। আমার গরুর দুধ সে মায়ের বাড়ি দিয়ে দিচ্ছে।

নাসিরুদ্দীন হোজ্জা : তোমার গরু, কৈ দেখিনি তো!

স্বামী : গরু তো আমারই, তবে এখনো কিনিনি। টাকার বন্দোবস্ত হলেই কিনে ফেলব।

নাসিরুদ্দীন হোজ্জা : যে গরু কিনবে তাই নিয়ে কথা হচ্ছিল—এখন তো তোমার কোন গরু নাই?

স্বামী : তা নাই, তবে এই কিনছি বলে!

নাসিরুদ্দীন হোজ্জা : তাই তো বলি, আমার সবজি বাগান লণ্ডভণ্ড করছে কার গরুতে! গরু ছেড়ে রেখে অন্যের বাগানের দফারফা করার মজা বোঝাচ্ছি।
এই বলে নাসিরুদ্দীন হোজ্জা প্রতিবেশীকে লাঠি দিয়ে দুঘা বসিয়ে দেয়।

স্বামী : নাসির ভাই! এ কি করছ, আমাকে মারছো কেন?

নাসিরুদ্দীন হোজ্জা : তোমার গরু আমার বাগানে ঢুকে সব সবজি সাবাড় করছে। তুমিও গরু ছেড়ে রেখেছ।

স্বামী : ভাই, তোমার আবার সবজি বাগান হল কবে, কোথায়?

নাসিরুদ্দীন হোজ্জা : বাগানটা এই হয়ে গেল বলে। বাগানটা কিছুদিন যাবতই বানাই বানাই করছি। তা তোমার বেয়াড়া গরুটা বাগানটার আর কিছু রাখছে না।

প্রতিবেশী বোঝে এর নাম নাসিরুদ্দীন হোজ্জা। তাই কোলাকুলি করে বলে : আমি তো বুনো ওল নই, বাঘা তেঁতুলের সঙ্গে পারব কেন!
তারপর শুরু হয় হাসির হল্কা।

Anuprerona
Anupreronahttps://www.anuperona.com
Read your favourite literature free forever on our blogging platform.
RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments