Read free bangla books online

বৃষ্টি হলে সাবধান! – নাহিদ আশরাফ উদয়

bristi hole sabdhan 1

হঠাৎ করে ঝুম বৃষ্টি নামলো….

বউ বললো ছাদে কাপড় শুকোতে দেয়া, নিয়ে আসতে।

ছাদে যাওয়ার আগে মেয়েদের রুমে উঁকি দিলাম। বড় মেয়ে টেবিলে বসে কী যেন পড়ছে। ছোটজন গভীর মনোযোগে তার বার্বি ডলের চুল আঁচড়াচ্ছে।

বললাম, ‘শহরে বড় হইসিস। বছরের প্রথম বৃষ্টির স্বাদ তো পাস নাই। চল ছাদে ভিজি। বৃষ্টিস্নান করতে করতে গান গাইবো।‘

বড়জন চশমার ফাঁক দিয়ে ভ্রু কুঁচকিয়ে বললো, ‘বাবা ত্যাক্ত কইরো না তো। কাল ম্যাথ এক্সাম। টু টু দি পাওয়ার থ্রি এর ম্যাথ পারো তুমি?’

আমি ছোটটার দিকে তাকালাম। তার মা তাকে বৃষ্টিতে ভিজতে দেয় না। বৃষ্টি ভেজার আনন্দে লাফাতে লাগলো। তারেই বগলদাবা করে ছাদে গেলাম।

বৃষ্টিতে মেয়েটার দৌড়াদৌড়ি দেখে শৈশবের কথা মনে পড়ে গেলো। আহা কী দিন ছিলো। গ্রীষ্মের ছুটিতে নানী বাড়ি যেতাম। বাড়ির পিছনে ঘাটভাঙা পুকুর ছিলো। বৈশাখের দিনগুলো প্রায়ই বজ্রপাতের শব্দে কৈ মাছ উজাইতো। পানি থেকে লাফাতে লাফাতে উঠানে চলে আসতো। তাজ্জব ব্যাপার। ছুটে গিয়ে খালি হাতে ধরার চেষ্টা করতাম। কাঁটা ফুটে যেত হাতে।

মেয়ে আমার কতক্ষণ লাফানো শেষে বললো, ‘বাবা গান কই?’

কী গান গাওয়া যায়? বৃষ্টি রিলেটেড? কিন্তু কিছুতেই ছোটদের গান মাথায় আসছে না। শৈশবের একটা গান ছিলো.. বৃষ্টি এলো খাপুর খুপুর.. পুরো পুরি মনে পড়ছে না, ধ্যাত।

মেয়ে অপেক্ষা করতে থাকলো গানের।

বড়দের গান গাওয়া যায়? গান তো গানই…বড় ছোট কী? খানিকক্ষণ উশখস করে গাইলাম, ‘এই বৃষ্টি ভেজা রাতে তুমি নেই বলে, সময় আমার আর কাটে না…

আমার মেয়ে চোখ বড় বড় করে গান শুনলো। তারপর আমাকে রেখেই কাপড় নিয়ে নিচে চলে গেল। তাদের মাকে কী বলছে জানি না।

তবে এরপর থেকে ছাদের গেইট খুলতেছে না। কীভাবে যেনো লক লেগে গেলো..

এখন এই বৃষ্টিতে মিস্তরি পামু কই?

Facebook Comment

You May Also Like

x