হযরত সুলতান নিজামুদ্দিন (রঃ) শিক্ষণীয় গল্প

sultan nizam shah ro
সুলতান নিজামুদ্দিন (রঃ)

হযরত সুলতান নিজামুদ্দিন (রঃ) এর যামানায় দিল্লিতে এক হিন্দু সাধু বস করতেন। তিনি এমন এক অনুশীলন করেছিলেন যে রোগীর উপর দৃষ্টি নিবন্ধ করলে তার রোগ দূর হয়ে যেতো। একবার হযরত নিজামুদ্দীন (রঃ) এর অসুখ হলো। তিনি মাঝে মাঝে বেহুশ হয়ে পড়তেন।

বেহুশ হওয়ার পর খাদেম গন একবার আরজ করলেন যে যদি অনুমতি দান করেন তবে অমুক সাধুর কাছে হযরত খাদেমের খাট কাধে করে নিয়ে যাবো।

সে দৃষ্টির মাধ্যমে রোগ দূর করতে পারে। হযরত বললেন সাবধান! এরুপ করিও না। তাহলে লোকদের আকিদা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু পিরের প্রতি মুরিদের মহব্বত হয়ে থাকে একশ পর্যায়ের। হযরত যখন আবার বেহুশ হয়ে পড়লেন তখন মুরিদগন এত পেরেশান হয়ে পড়লেন যে হযরতের খাট উড়িয়ে সাধুর বাড়িতে হাজির করলেন এবং ভাবলেন এটা হযরতের ইচ্ছার বিরিদ্ধে হওয়ায় মাফ চেয়ে এর মীমাংসা করে নেওয়া যাবে। সাধু দেখলেন এত বড় ব্যক্তিত্ব তার বাড়িতে এসে উঠেছেন।

তিনি তাৎক্ষানাৎ সব কাজ ফেলে রেখে ছুটে গেলেন হযরতের খাটের কাছে এবং দৃষ্টি দিতেই এমন ভাবে রোগ সব দূর হয়ে গেল যে হযরত একে বারে উঠে বসলেন। মনে হল যেন কোন রোগ ছিল না। তিনি দেখলেন যে এটা সাধুর বাড়ি। বুঝতে পারলেন যে এরা সামান্য কষ্ট সহ্য করতে না পেরে আমাকে এখানে নিয়ে এসেছে। তাই কেহ কে কিছু বললেন না। বরং তিনি সেই সাধুকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার মধ্যে এই শক্তির কিসের প্রভাবে সৃষ্টি হয়েছে; কোন আমলের দ্বারা এই যোগ্যতা অর্জন বল দেখি।

সাধু আরজ করলেন, আমার মধ্যে শুধু একটি জিনিস আছে, যা আমার গুরু আমকে শিক্ষা দিয়েছে।আর সেটা হল এই যে তিনি বলেছিলেন, সব সময় নফসের বিরুদ্ধে চলিও; অর্থাৎ তোমার মন যে যে কাজ টি করতে চাই সেই কাজ টি করিও না আর যে কাজটি করতে চায় না সেই কাজ টি করিও। এই একটি মাত্র অভ্যাসের দ্বারা আমার নফসের মধ্যে এমন একটি অভ্যাসের সৃষ্টি হয়েছে যার দ্বারা আমি তাছারুফ করে রোগ দূর করে দিই। এই কথা শুনে হযরত জিজ্ঞাসা করলেন, আচ্ছা বল দেখি তোমার মুসলমান হতে মন চায়? সাধু আরজ করলেন না চাই না।

তাহলে তোমার গুরুর শিক্ষার উপর আমল হয় কৈ। সাধু চিন্তায় পড়ে গেল। এদিকে হযরতের উপকারের বদলে উপকারের চিন্তার দুয়া করতে লাগলেন, হে আল্লাহ সে আমার উপকার করেছে, আমিও তার উপকার করতে চাই সে আমার শরীরের রোগ দূর করেছে আমি তার রুহানি রোগ কুফুরি দূর করতে চাই। তুমি সাহায্য কর। সাধু আর ঠিক থাকতে পারলেন না, একটি ঘূর্ণি ঝড় খুলে গেল তার অন্তরে। সে তাৎক্ষাণাৎ বলে উঠলো। সুতরাং উপকারের বদলে উপকার বাস্তবায়িত হলো। সাধু মুসলমান হয়ে ঈমানের সৌভাগ্য লাভ করলেন।

Facebook Comment

You May Also Like

About the Author: eBooks

Read your favourite literature free forever on our blogging platform.