Wednesday, August 27, 2025
Homeঅনুপ্রেরণাসফলতার গল্পসফলতার গল্প: বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে সাফল্য

সফলতার গল্প: বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে সাফল্য

এখন পুকুর, খাল-বিলের পাশাপাশি বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে সফলতা পাচ্ছেন মৎস্য চাষিরা। স্বল্প জায়গা ও ঘরের ভেতর আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ঘরের ভেতর ও বাড়ির আঙিনায় মাছ চাষ হচ্ছে।

বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে সফল হয়েছেন সিরাজগঞ্জের পৌর এলাকার সরকার পাড়ার তুষার আহম্মেদ ও চর-রায়পুর গ্রামের রিপন সরকার। কম খচরে মাছ চাষে সফল হওয়ায় নিজ এলাকা পেরিয়ে এখন পুরো জেলায় মৎস্যজীবী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন তারা। ইতোমধ্যে তাদের হাত ধরে জেলায় নতুন পদ্ধতিতে মাছ চাষে সম্ভাবনার এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে।

বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে তুষার ও রিপনের সফলতা দেখে জেলার শিক্ষিত বেকার যুবকদের বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহ বাড়ছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে চাকরির পেছনে না ছুটে স্বাবলম্বী হয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এমন প্রত্যাশা অনেকের।

বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষে একদিকে যেমন দেশি মাছের চাহিদা পূরণ হচ্ছে অন্যদিকে আমিষের যোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছে। সনাতন পদ্ধতিতে পুকুর খনন করতে গিয়ে কৃষিজমি কমছে। কিন্তু বায়োফ্লক পদ্ধতিতে পুকুর খননের কোনও প্রয়োজন হয় না। বাড়ির উঠানে স্বল্প জায়গায় ও অল্প পুঁজিতে এ পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা সম্ভব।

বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ

বায়োফ্লকে মৎস্য চাষি তুষার আহম্মেদ জানান, ইউটিউব চ্যানেলে মাছ চাষের ভিডিও দেখে তার আগ্রহ হয়। বায়োফ্লক পদ্ধতি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে তিনি রাজশাহী থেকে প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে প্রায় ২ বছর আগে নিজ বাড়ির ঘরের মেঝেতে ৯০ হাজার লিটার পানি ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন হাউজ তৈরি করেন। এতে তার ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় হয়। এ কাজের অর্থ ও সহযোগিতা আসে পরিবার থেকেই। এরপর সেখানে দেশি শিং, কৈ, মনোসেক্স তেলাপিয়া ও কই মাছের ২৫ কেজি পোনা ছাড়েন। মাছের পোনা ও খাবার কেনায় তার খরচ হয় প্রায় ৭০ হাজার টাকা। স্থানীয় বাজারে মাছ বিক্রি করেন ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা। বর্তমানে একই হাউজে আবারও মাছের পোনা ছেড়েছেন।

বায়োফ্লকে মৎস্য চাষি রিপন সরকার জানান, যাদের পক্ষে পুকুর ইজারা নেওয়া সম্ভব না তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে অল্প পুঁজি ও জায়গায় মাছ চাষ করতে পারেন। দশ কাঠা পরিমাণ পুকুরে যে পরিমাণ মাছ চাষ করা যায়, একটি বায়োফ্লক হাউজেও একই পরিমাণ মাছ চাষ করা সম্ভব। হাউজে মাছ চাষে খাবারের খরচও কম। আগামীতে বায়োফ্লকে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করবেন তিনি। তবে সরকার যদি জামানতবিহীন ঋণের ব্যবস্থা করে তাহলে অনেকে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হবে।

সিরাজগঞ্জ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সাহেদ আলী বলেন, ‘বায়োফ্লক পদ্ধতিতে অল্প জায়গায় মাছ চাষ করা সম্ভব। এ পদ্ধতিতে মাছ চাষে অনেকে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। বায়োফ্লক পদ্ধতিতে মাছ চাষ করে লাভবান হচ্ছে দেখে অনেকে বায়োফ্লক পদ্ধতির মাছ চাষে দিন দিন আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। মৎস্য অফিস থেকে আগ্রহীদের সব ধরনের সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।’

Anuprerona
Anupreronahttps://www.anuperona.com
Read your favourite literature free forever on our blogging platform.
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here


Most Popular

Recent Comments