Friday, April 19, 2024
Homeরম্য গল্পঝাইলকা - মজার গল্প

ঝাইলকা – মজার গল্প

ami sorkari lok

আগের দিনে গ্রামবাংলার মানুষের নানারকম রীতিনীতি পালন করার অভ্যাস ছিলো। তাদের লজ্জা, শরম, সংস্কারও ছিল মেলা। বউরা নিজের স্বামীর নাম মুখে আনতো না। সে ছিল ভারী লজ্জার ব্যাপার। তাই স্বামীর নামে তাদের মুখে ছিল কুলুপ আঁটা।

জামাইরা শ্বশুরের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য বলত : হজরত ছাব।
কোন কোন ক্ষেত্রে ছেলেরা বাপকে বলতোঃ আব্বা হুজুর।

আবার ভৈরব নরসিংদী অঞ্চলে ‘সম্বন্ধী’ কে গালি মনে করে তাকে সুভাষণে বলত : ‘বড়গিরি’ অর্থাৎ কিনা বড় পাহাড়। মুরুব্বিদের সম্মানতো পাহাড়ের মত উঁচুই হবে। তাই পাড়ার মাতবর, মোড়লের নামও কেউ নিতে চাইত না। এমনকি সমবয়সীরাও বলত : মাতবর সাব বা নিদেনপক্ষে মাতবর।

তো, এক গ্রামের এক পঞ্চায়েতের প্রধানের নাম ছিল : আদাবর ব্যাপরী। ফলে সেই পঞ্চায়েতের লোকেরা ‘আদা’ কে আদা বলত না। কারণ, তাহলে তো তাদের পঞ্চায়েত প্রধানের নামের দুটি আদ্যাক্ষর বলা হয়। তারাতো তার ইয়ার বন্ধুনা যে ডাকনামের মতো করে ডাকবে। এটা তো পঞ্চায়েত প্রধানকে অসম্মান করা বা গালি দেয়ার শামিল। তার নামের অমন বিকৃতি করা সে যে ভারী বেয়াদপির ব্যাপার। তাই পঞ্চায়েতের সকলেই ‘আদা’ কে বলত ‘ঝাইলকা’। আদায় ঝাজ আছে বলে এ রকম একটি নাম তারা ঠিক করে নেয়।

এই পঞ্চায়েতের এক ছেলে পাশের গায়ের এক বাড়িতে গৃহসেবকের কাজ নিয়েছে। বাড়ির ফুটফরমাস, হাটবাজার এইসব কাজ তাকে করতে হতো। একদিন গৃহকত্রী তাকে বাজারে পাঠিয়েছেন আদা কিনে আনার জন্য। গিন্নি গোশত রাঁধবেন তাই আদার দরকার।

গিন্নিমার সেই গৃহপরিচারক নানা দোকানে যেয়ে বলছে, ঝাইলকা আছে?

দোকানিরা বলে : না।

কেউ বলেঃ ‘ঝাইলকা’ আবার কী জিনিস!

গৃহসেবক বাড়ি ফিরে এসে বলে : না খালা, দোকানে ঝাইলকা নাই।

গৃহকত্রী অবাক হয়ে বলেন : ঝাইলকা কী? আমি কি তোকে ঝাইলকা আনতে বলেছি।

গৃহসেবকঃ তাই তো বলেছেন।

গৃহকত্রী : আমি না তোকে ‘আদা’ আনতে বললাম।

গৃহসেবক ; আমরাতো তাকেই ঝাইলকা বলি।

Anuprerona
Anupreronahttps://www.anuperona.com
Read your favourite literature free forever on our blogging platform.
RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments