অজানা রহস্য – ভৌতিক গল্প

অজানা রহস্য - ভৌতিক গল্প

ঘটনাটা আজ থেকে কয়েক বছর আগে আমার মামির সাথে ঘটা। চাকরির সুত্রে আমার মামা ও মামি পুরান ঢাকার একটি বাসায় ভাড়া থাকত। মামার সেই বাসাটার পাশেই একটা ক্লিনিক ছিল। গর্ভবতীদের সন্তান প্রসব এবং এবোরশন করানো হতো সেখানে। অনেকসময় মৃত সন্তান এবং ভ্রুণগুলোকে ক্লিনিকের পাশের ফাঁকা স্থানে ক্লিনিকের আয়ারা পুঁতে দিত।

আমার মামি তখন ৬ মাসের অন্তঃসত্তা ছিল। মামি রোজ ফজরে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পরে কুরআন পাঠ করত। একদিন মামি ফজরের নামাজ পরে কুরআন পাঠ করতে বসবেন এমন সময় একটা বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শুনতে পারল মামি। গেট খুলে বাহিরে তাকিয়ে দেখল যে বাহিরে তখনও অন্ধকার। মামির নাকি তখন খুব একটা ভয় লাগছিল না।

তাই সাহস করে একটা লোহার পেরেক হাতে নিয়ে সে আগাতে লাগল। কান্নার আওয়াজ ক্রমশ গভীর হচ্ছিল। মামি এগোতে এগোতে সেই ফাঁকা স্থানটিতে গিয়ে দাঁড়াল। মামি জানত যে এখানে মৃত বাচ্চাদের লাশ এবং এবোশনের ভ্রুণ পুঁতে ফেলা হয়।তবুও মামি সাহস করে সেখানে দাঁড়িয়ে চারপাশে তাকিয়ে খুঁজতেছিল কোথায় থেকে আসতেছিল সেই বাচ্চাটির চিৎকারের আওয়াজ। এমন সময় কিছু একটা চর্বি জাতীয় জিনিস খুব জোরে মামির মুখে এসে পরে এবং মামি চিৎকার দিয়ে অজ্ঞান হয়ে যায়।

মামির চিৎকার শুনে পাশের ক্লিনিকের গেইটম্যান এবং ওয়ার্ডবয় ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তারা মামার পরিচিত ছিলেন। মামাকে খুব দ্রুত সেখানে তারা ডেকে আনেন। ততক্ষণে মামির দাঁত লেগে গিয়েছিল। বেশ কিছুক্ষণ পর মামির জ্ঞান ফেরে। মামি তখনও বারবার সেন্সলেস হয়ে যাচ্ছিল।যাই হোক। এভাবে বেশ কয়েকদিন মামি অসুস্থ ছিল। তারপর মামির বাচ্চা না হওয়া পর্যন্ত মামা মামিকে তার বাবার বাড়িতেই রেখে যায়।

এই ঘটনাটির বিষয়ে মামি সবসময় একটাই কথা বলেন, “আমার মুখে বড় চর্বি জাতীয় থেলথেলে একটা নোনতা বস্তু এসে পরছিল। আমি রক্তের স্পষ্ট গন্ধ পাইছিলাম”। তবে আশ্চর্যের বিষয়টা হলো মামা এবং বাকিদের একই কথা “আমরা সেদিন সেখানে কিছুই দেখি নাই। আমরা যখন সেখানে যাই তখন দেখি শুধু তোমার মামি সেখানে অজ্ঞান হয়ে পরে আছে এবং তার হাতে একটি লোহার পেরেক ছিল। “আপনারা হয়ত অনেকেই জানেন যে জ্বীন,পরী, পিচাশ এরা আগুন এবং লোহাকে ভয় পায়।

সেদিন সেই লোহার পেরেকটি সাথে নেওয়ার জন্যই হয়তো মামি এবং তার গর্ভে থাকা আমার মামাতো ভাইটা বেঁচে গেছিল। আজ ৮ বছর পেরিয়ে গেছে। আমার মামাতো ভাইটা এখন ক্লাস ২ তে পড়ে।

Facebook Comment

You May Also Like

About the Author: eBooks

Read your favourite literature free forever on our blogging platform.