
ছেলেটির নাম এরিক। ওর মায়ের এক চোখ অন্ধ!! স্কুলের বন্ধুদের সামনে এরিক এ নিয়ে খুবই বিব্রত হয়। একবার ওর মা স্কুলে গেলো খাবার নিয়ে, এরিক চিৎকার করে বললো তুমি মরে যাও না কেন? তাহলে আমাকে এই লজ্জা পেতে হয় না বন্ধুদের কাছে।
ছিঃ কি বিশ্রি দেখা যায় একটা চোখে যখন তাকাও। খুব মনোযোগ দিয়ে এরিক লেখাপড়া করে, কারণ যত দ্রুত সম্ভব সে বড় হয়ে এখান থেকে চলে যেতে চায়। খুব ভালো রেজাল্ট করলো এরিক, সেই সাথে প্রতিষ্ঠা! তার নিজের বাড়ি, গাড়ি, বউ, ছেলে-মেয়ে নিয়ে সুখের সংসার! একচোখ অন্ধ মায়ের কোন চিহ্নই নেই তার জীবনে।
এদিকে বৃদ্ধা মৃত্যুর দিন গুনছে আর মরবার আগে একটি বারের জন্য নাতিগুলোর মুখ দেখার লোভ সামলাতে না পেরে ঠিকানা খুঁজে খুঁজে চলে গেলো ছেলের বাড়ি।
বৃদ্ধাকে দরজায় দেখে এরিক হুংকার দিলো কোন সাহসে এসেছো এখানে? দেখছনা তোমাকে দেখে আমার বাচ্চারা ভয় পাচ্ছে? দূর হও!! মা মনে খুব কষ্ট বুকে নিয়ে ফিরে যায়। এর কয়েক বছর পরে স্কুলের পূনর্মিলনীতে বিশেষ অতিথী হয়ে গেলো এরিক!
অনুষ্ঠান শেষে কি মনে করে যেন বৃদ্ধাকে দেখতে গেলো। প্রতিবেশী অপর বৃদ্ধা জানালো বছর দুই আগেই তিনি গত হয়েছেন আর যাবার আগে এরিকের জন্য রেখে গেছেন একখানা চিঠি তাতে লিখা আমার সোনামনি এরিক, জানি তুমি তোমার মা কে অনেক ঘৃণা করো। আমি তোমাকে জীবনে কিছুই দিতে পারিনি, দিয়েছি শুধু লজ্জা। মা হিসেবে আমি ব্যর্থ। এ জন্য আমি তোমার কাছে ক্ষমা প্রার্থী।
ছোটবেলায় একবার তোমার একটা এক্সিডেন্ট হয়েছিল আর তাতে তোমার একটা চোখ খুব খারাপ ভাবে আহত হয়েছিল। তুমি সারাজীবন একচোখ দিয়ে দেখবে, মা হিসেবে এটা আমি মেনে নিতে পারিনি, তাই নিজেই বাকি জীবন একচোখ দিয়ে দেখবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আজ তুমি দুচোখ দিয়ে দেখতে পারছো, আমার কাছে এর চেয়ে আনন্দের আর কিছু নেই।
তুমি ভালো থেকো বাবা ইতি তোমার হতভাগা মা।