Read Free Bangla Books Online



অভিশপ্ত দ্য ক্রাইং বয় পেইন্টিং

অভিশপ্ত দ্য ক্রাইং বয় পেইন্টিং

ছেলেশিশু। কিন্তু তার চোখ দিয়ে পড়ছে অঝোরে পানি। ঠিক এমনই এক শিল্পকর্মকে আশির দশকের দিকে অভিশপ্ত নাম দেওয়া হয়েছিল। দ্য ক্রাইং বয় পেইন্টিং নামের এ ছবিটি জিওভান ব্রাগোলিন নামে একজন ইতালীয় চিত্রশিল্পী একেছিলেন। যদিও এটা তার স্প্যানিশ ছদ্মনাম, আসল নাম ব্রুনো আমাডিও।

আশির দশকে বেশ কিছু বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে যায়; কিন্তু সেসব বাড়িতে থাকা এই পেইন্টিং অক্ষত থেকে যায়। প্রায় ১৬টি পুড়ে যাওয়া বাড়িতে এই চিত্রকর্মটি পাওয়া গিয়েছিল। সেসব বাড়ির সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেলেও ছবিটি অক্ষত ছিল। আর তখন থেকেই মানুষজনের মধ্যে এই বিশ্বাস জন্মে যে, এই চিত্রকর্মটি অভিশপ্ত।

এই পেইন্টিংটি ১৯৫০-৮০-এর দশকে ব্যাপকভাবে ছাপা হচ্ছিল এবং যুক্তরাজ্যজুড়ে ব্যাপকভাবে বিক্রি হয়েছিল। তবে এই শিল্পকর্মে থাকা ছবিটি নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন উঠেছিল। জিওভানও এ রকম ক্রাইং বয় নিয়ে অসংখ্য পেইন্টিং করেছিলেন। কিছু পত্রিকা প্রচার করে, তিনি একটি স্প্যানিশ এতিমখানার শিশুদের ছবি আঁকছিলেন, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আরেকটি গল্প প্রচলিত আছে, জর্জ ম্যালরি নামে একজন স্কুলশিক্ষক এই ছবির চিত্রশিল্পীকে খুঁজে বের করেছিলেন এবং তাকে পেইন্টিং করা ছেলেটির সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তাকে জিওভানও বলেছিলেন, ছেলেটি ডন বনিলো নামে একটি স্প্যানিশ পথশিশু ছিল।

জিওভানের বাচ্চাটির সঙ্গে ১৯৬৯ সালে মাদ্রিদে তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল। বিশ্বযুদ্ধের শেষে ইতালি থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর যার বাবা-মা রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডে মারা গিয়েছিল এবং তাই মানুষ তাকে এল ডায়াবলো নামে ডাকতে শুরু করেছিল। এর মানে ছিল শয়তান। এ জন্য কেউ তাকে দত্তক নিতে চায়নি। সে নাকি যেখানে যেত, সেখানেই আগুন লেগে যেত। ছেলেটিকে একজন পুরোহিতের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জিওভান দত্তক নিয়েছিলেন এবং তার চিত্রকর্ম এঁকে তাকে অপব্যবহার করতে শুরু করেন।

ছোট্ট দুঃখী অনাথের চিত্রগুলো তাকে ধনী করে তোলে।

একদিন হঠাৎই তার স্টুডিওটি রহস্যজনকভাবে পুড়ে যায় এবং জিওভান এই অগ্নিসংযোগের জন্য দায়ী করে সেই ছেলেটিকে এবং ছেলেটি সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এর কয়েক বছর পর, বার্সেলোনায় একটি গাড়ি বিস্ফোরণে সেই ছেলেটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ড. ডেভিড ক্লার্ক নামের এক সাংবাদিক এই রহস্য সম্পর্কে গবেষণা করেছিলেন। তিনি বলেন, তিনি কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি যে জর্জ ম্যালরির জিওভানির সঙ্গে কখনো দেখা হয়েছিল।

হয়তো এগুলো তিনি বানিয়ে বলেছিলেন খবরে আসার জন্য। জিওভান হয়তো ২০-৩০ জন কান্নাকাটিকারী ছেলেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ভেনিসে দেখার পর একেছিলেন। যার প্রিন্ট ১৯৭৯-এর দশকে ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলোতে প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হয়েছিল।

Facebook Comment

You May Also Like