Tuesday, August 19, 2025
Homeবাণী ও কথাপাওলো কোয়েলহোর লেখা বই 'দ্য এ্যালকেমিস্ট'

পাওলো কোয়েলহোর লেখা বই ‘দ্য এ্যালকেমিস্ট’

কিভাবে কষ্টকে জয় করে জীবনের লক্ষে পৌছতে হয়, কিভাবে স্বপ্ন দেখতে হয়, কিভাবে স্বপ্নের বাস্তব রুপ দিতে হয়! ঠিক তেমনি একটা বই পাওলো কোয়েলহোর লেখা ‘দ্য এ্যালকেমিস্ট’। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৮০টি ভাষায় অনূদিত এবং প্রায় ৮৩ মিলিয়ন কপি বিক্রির রেকর্ডের সুবাদে ইতিমধ্যে গিনেস বুকে নাম লিখিয়েছেন লেখক পাওলো কোয়েলহো।

রুপকথার আবেশে লেখা তীক্ষ্ণ সংলাপ নির্ভর এই রুপক উপন্যাসটির কাহিনী আবর্তিত হয়েছে সান্তিয়াগো কে ঘিরে। সান্তিয়াগো, বই পড়তে পারা এক রাখাল বালক। বাবা-মা’র স্বপ্ন ছিল ছেলে বড় হয়ে যাজক হবে। কিন্তু সেই ছেলে আজ রাখাল কেন?কারন ছেলের চোখে ছিল পরিব্রাজকের স্বপ্ন! ছিল অজানাকে জানার আকাঙ্ক্ষা। এই আকাঙ্ক্ষা থেকেই কিছু ভেড়া কিনে পৃথিবীর পথে বেরিয়ে পড়ে সান্তিয়াগো।

একটা স্বপ্ন দেখে প্রায়ই ঘুম ভেঙ্গে যেত তার, কিন্তু এর অর্থ সে জানত না। কিন্তু সে তাইফায় বাস করা এক বৃদ্ধার কথা জানতো, যে কিনা স্বপ্নের ব্যাখ্যা দিতে পারতো। সে গেল সেখানে, বৃদ্ধা তাকে জানায় তার স্বপ্নের অর্থ হল তাকে মিশরের পিরামিডে যেতে হবে আর সেখানেই সে অনেক গুপ্তধনের সন্ধান লাভ করবে! এই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হয়নি
সান্তিয়াগো। ফেরার পথে দেখা হয় নিজেকে সালেমের রাজা দাবি করা এক বৃদ্ধের সাথে। এই বৃদ্ধও তাকে স্বপ্নের পথে চলতে বলে, সাথে সান্তিয়াগোর জীবনের এমন কিছু ঘটনা বলে যা আগে কেউ জানতোনা। অবাক হয় সে, সাথে বিশ্বাসও। এই বৃদ্ধ রাজা তাকে মিশরে যাওয়ার পথ বাতলে দেয় আর সাথে দেয় সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক দুটি পাথর- ‘উরিম’ ও ‘থুমিম’! কিন্তু এটা তো শুধুই স্বপ্ন, এটা কি বাস্তব রুপ লাভ করবে? বৃদ্ধ রাজা বলে- “পৃথিবীতে তুমি যা-ই করতে চাইবে পৃথিবী সেটাই তোমার জন্য রেখেছে। আর পৃথিবীতে এটাই তোমার উদ্দেশ্য”।

এরপর, নিজের সাথে থাকা অনেকদিনের সঙ্গী ভেড়াগুলো বিক্রি করে জাহাজে চড়ে রওনা দেয় আফ্রিকার উপকূল তাঞ্জিয়ার দিকে। উদ্দেশ্য, সেখান থেকে সাহারা পেরিয়ে যাবে মিশরের দিকে। কিন্তু যাত্রার শুরুতেই প্রতারকের খপ্পরে সর্বস্ব খোয়া যায় তার। বেঁচে থাকার তাগিদে কাজ নেয়, তাঞ্জিয়ার এক স্ফটিক বিক্রির দোকানে। সেখানে এক বছর কাজ করার পর অর্জিত অর্থ আর অভিজ্ঞতা নিয়ে পুনরায় রওনা দেয় তার স্বপ্ন পূরণের পথে,এক ক্যারাভ্যানের সাথে। তার সঙ্গী হয় এক ইংরেজ, যে কিনা এক এ্যালকেমিস্টের খোজে বেরিয়েছে। বেরিয়েছে পরশপাথর আর অমৃতসুধার সন্ধানে!

মরুভূমির দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে নানারকম অভিজ্ঞতা অর্জন করে সান্তিয়াগো। পথিমধ্যে আরবে গোত্র যুদ্ধ চলার কারনে তাদের আশ্রয় নিতে হয় এক মরূদ্যানে। সেখানে ফাতিমা নামক একজনের সাথে দেখা হয় তার। এই দেখাদেখি শেষ পর্যন্ত পরিণত হয় প্রণয়ে। কিন্তু এই ভালোবাসা তাকে তার লক্ষ থেকে দূরে সরিয়ে দেয়নি বরং ফাতিমার
কাছ থেকে নব উৎসাহ লাভ করে সে। ফাতিমা তাকে জানায়, এখন থেকে সান্তিয়াগোর আশায় পথ চেয়ে থাকবে সে। সান্তিয়াগোও ফিরে আশার প্রতিশ্রুতি দেয়।

এরই মধ্যে সান্তিয়াগোর সাথে দেখা হয় সেই এ্যালকেমিস্টের, যার খোজে বেরিয়েছিল তার পথসঙ্গি। সেই এ্যালকেমিস্ট সান্তিয়াগোর মাঝে পৃথিবীর ভাষা খোঁজার শক্তি খুজে
পায়।তার স্বপ্নপূরণে এগিয়ে আসে সে। যুদ্ধ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় থাকেনি তারা, এ্যালকেমিস্ট কে সাথে নিয়ে আবারো তার লক্ষের দিকে বেরিয়ে পড়ে সান্তিয়াগো।
এভাবেই এগিয়ে যেতে থাকে ঘটনা।

শেষ পরিনতিতে কি হয়েছিল, মিশরের পিরামিডে কি গুপ্তধনের সন্ধান পেয়েছিল? উত্তরটা বলেই দেই- না, পায়নি! কিন্তু একটা চমক আছে শেষে, বইটি না পড়লে যা কখনো জানতে পারবেন না!

খুব সাধারণ এক গল্প,তাই না? কিন্তু ঘটনার ঘনঘটা, উত্তেজনা ও জীবনবোধের বাকশৈলীতে আর লেখকের লেখনীতে এই গল্পটাই হয়ে উঠেছে অসাধারণ। বেস্টসেলার এই বইটি পড়ার আমন্ত্রন রইল!

বইটির লিংক : দ্য এ্যালকেমিস্ট – পাওলো কোয়েলহো

Anuprerona
Anupreronahttps://www.anuperona.com
Read your favourite literature free forever on our blogging platform.
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here


Most Popular

Recent Comments