
প্রচণ্ড যুদ্ধ চলছে। শত্রুপক্ষের দিক থেকে গুলি ছুটে আসছে ঝাঁকে ঝাঁকে। এক সৈনিক নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে পারলেও কিছু দূরে থাকা তার বন্ধুর পক্ষে তা সম্ভব হল না।
গুলি এসে লাগল তার বুকে। তাকে পড়ে যেতে দেখে আতঙ্কের শীতল স্রোত বয়ে গেল বন্ধুর ভেতর।
সৈনিকটি তার অফিসারের কাছে অনুমতি চাইলেন- গুলি লেগে পড়ে যাওয়া বন্ধু কাছে যেতে চান তিনি। তুলে নিয়ে আসবেন তাকে।
অফিসার বললেন, ‘অবশ্যই যেতে পার। কিন্তু আমি মনে করি, এটা ঠিক হবে না। কারণ, তোমার বন্ধু সম্ভবত গুলি খেয়ে মারা গেছে। ওখানে গেলে তোমার জীবনও ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।’
সৈনিকটি এ কথা শুনেও বন্ধুর কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। অলৌকিকভাবে শত্রুপক্ষের গুলি এড়িয়ে পৌঁছে গেলেন বন্ধুর কাছে। তাকে কাঁধে তুলে নিয়ে ফিরে আসতে সক্ষমও হলেন।
কিন্তু অফিসার তার বন্ধুকে পরীক্ষা করে দুঃখ ভারাক্রান্ত কণ্ঠে বললেন, ‘আমি তখনই বলেছিলাম, তোমার ওখানে যাওয়া ঠিক হবে না। তোমার বন্ধু মারা গেছে। তাকে আনতে গিয়ে তুমি নিজেও কিছুটা আহত হয়েছ। কী লাভ হল বলো! সবই অর্থহীন।’
সৈনিকটি বললেন, ‘স্যার, আমার ওখানে যাওয়াটা অর্থহীন ছিল না!’
অফিসার: ‘তোমার বন্ধু তো মারা গেছে। তাহলে কিভাবে বলো তোমার যাওয়াটা অর্থহীন ছিল না?’ জানতে চাইলেন অফিসার।
সৈনিক: ‘স্যার, আমি যখন তার কাছে পৌঁছলাম তখনও সে বেঁচে ছিল। আমি তার শেষ কথা শোনার পরিতৃপ্তি পেয়েছি।’
অফিসার: ‘সে তোমাকে শেষ কথা কী বলেছিল?’
সৈনিক: বলল, ‘সে আমাকে বলেছিল- বন্ধু, আমি জানতাম, তুমি আসবে।’
নীতিকথা : বিশ্বাসই হল প্রকৃত বন্ধুত্বের মূলভিত্তি।