হীরার দাঁতে কুপোকাত – মজার গল্প

'হীরার দাঁতে কুপোকাত' মজার গল্প

এক গ্রামের বাজার। রোজ বাজার বসে। বাজারে ভিড়ভাট্টা মন্দ হয় না। এই গ্রামের কিছু লোক রাজধানী শহর ঢাকায় থাকে। ঢাকার শহর থেকে গ্রামটির দূরত্ব বেশি নয়। তাই সপ্তাহান্তে ছুটি কাটাতে অনেকেই গ্রামের বাড়িতে আসে। এক বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ও শুক্রবার পুরো দিন ও ওই দিনগত রাত বাড়িতে কাটিয়ে শনিবার সকালের বাসে বা নিজ গাড়িতে ঢাকার পথ ধরে। তো, শুক্রবার সকালের বাজারটা তাই ভারি জমজমাট হয়ে ওঠে।

দোকান পসাররাও জানে ওই দিন শহুরে সাহেব-সুবোরা বাজারে আসবেন– জিনিসপত্র পছন্দ হলে কিনবেন চড়া দামেই। এখন গ্রামেও মধ্যপ্রাচ্য বা জাপান বা ইউরোপ নিদেনপক্ষে কোরিয়া-সিঙ্গাপুর-মালয়েশিয়া প্রবাসীদের আত্মীয়স্বজনদের পয়সার গরম কম না। তাই টক্কড়টা মন্দ হয় না। যে দিনের কথা বলছি, সেদিন এক ঢাকাই শৌখিন লোক তার গ্রামীণ মোবাইল ফোন (সে গ্রামে তখনো নেটওয়ার্ক ছিলোনা) হাতে নিয়ে মাছের বাজারে আসেন।

টিপাটিপি করেন, কানে লাগিয়ে কথা বলার ভান করেন। শেষে এক মাঝির (এখানে মাছওয়ালাকে মাঝি বলে) মাছের খাড়ির ডালার ওপর ঝুঁকে পড়ে মোবাইল দিয়ে মাছের ভাগ দেখিয়ে বলেন : এই মাঝি, এই ভাগা কত, আর ওই ভাগা কত?

পাশেই ছিলেন নতুন ধনাঢ্য এক গ্রামীণ ভদ্রলোক। তিনি শার্টের হাত গুটিয়ে মুষ্টিবদ্ধ করে ছেলের বিদেশ থেকে পাঠানো দামী ঘড়ি পরা কব্জি দিয়ে ভাগ দেখিয়ে মাছের দাম জিজ্ঞেস করেন।

মাঝিও আসল গরিব মাঝি ছিল না–সে ছিল নিকারি (মাছের বড় ব্যবসায়ী)। গ্রাম্য কথায় বলে, মাঝির ভাত জোটে না নিকারির কানে সোনা’। সেই মাঝিরূপী নিকারি তার মুখ বিকৃত করে হীরায় বাঁধানো দাত দেখিয়ে বলেঃ এই ভাগা এত, আর ওই ভাগা অত!

You May Also Like

About the Author: Anuprerona

Read your favourite literature free forever on our blogging platform.