Thursday, March 28, 2024
Homeকিশোর গল্পচোর - রাসকিন বন্ড

চোর – রাসকিন বন্ড

চোর - রাসকিন বন্ড

অরুণের সঙ্গে যখন প্রথম দেখা হয় তখনও আমি চোর ছিলাম। আমার বয়স মাত্র পনের বছর। কিন্তু, আমি চুরিতে অভিজ্ঞ ও সিদ্ধহস্ত।

অরুণ তখন কুস্তি দেখছিল। ওর বয়স প্রায় বিশ বছর। দেখতে লম্বা ও পাতলা গড়নের। তাকে আমার যথেষ্ট দয়ালু এবং মিশুক মনে হলো। সে খুব মনোযোগ দিয়ে খেলা দেখছিল। দু’জন মানুষ সারা শরীরে তেল মেখে নরম মাটির ওপর কুস্তি লড়ছে। ঠিক তখন আমি অরুণের সঙ্গে কথা বললাম। সে বুঝতে পারলো না আমি তার অপরিচিত।

বললাম, তোমাকে কুস্তিগিরের মতো লাগছে। অরুণের উত্তর, তুমিও কি কুস্তিগির?

তার প্রশ্নে আমি বিচলিত। কারণ, আমি রোগা ও শারীরিকভাবে খুব সবল নই।

তবুও বললাম, হ্যাঁ, মাঝে মাঝে কুস্তি খেলি।

তোমার নাম কী?

দীপক।

সেদিন রাতে আমি রাস্তায় ঘুরেছি। কারণ, আমি যে খাবার রান্না করেছি তা খুব জঘন্য হয়েছে। আর অরুণ সেই খাবার প্রতিবেশীর বেড়ালকে খেতে দিয়েছে এবং আমাকে চলে যেতে বলেছে।

মিথ্যা বললাম। দীপক ছিল আমার পঞ্চম নাম। আমি এর আগে নিজেকে রণবীর, সুধীর, ত্রিলোক এবং সুরিন্দর বলে পরিচয় দিয়েছি। এভাবে আমরা টুকটাক কথা বলতে লাগলাম। অরুণের কথা কুস্তিখেলাতে সীমাবদ্ধ ছিল। কিছুক্ষণ পর ও দর্শকের ভিড় থেকে সরে গেল। আমিও তাকে অনুসরণ করলাম।

আমাকে দেখে সে বলল, খেলা কেমন উপভোগ করছ? মুচকি হেসে বললাম, আমি তোমার জন্য কাজ করতে চাই। সে হাঁটা না থামিয়ে বলল, তুমি কি ভাবো, আমি চাই কেউ আমার জন্য কাজ করুক? আমি উত্তর দিলাম, সারাদিন কাজের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছি। যখন তোমাকে দেখলাম, তখন মনে হলো হয়তো তোমার কাছে কাজ পেতে পারি।

তুমি আমাকে তোষামোদ করছো তো? কিন্তু তুমি আমার জন্য কাজ করতে পারবে না।

কেন?

কারণ আমি তোমাকে টাকা দিতে পারব না।

আমি এক মিনিটের জন্য ভাবলাম। সম্ভবত আমি তাকে চিনতে ভুল করেছি।

আচ্ছা আমাকে খাওয়াতে তো পারবে?

তুমি রান্না করতে পার?

হ্যাঁ, রান্না করতে পারি, আমি মিথ্যা বললাম।

তুমি যদি রান্না করতে পারো, তাহলে তুমি খেতে পাবে।

সে আমাকে তার ঘরে নিয়ে গেল এবং বলল, তোমাকে বারান্দায় ঘুমাতে হবে।

কিন্তু সেদিন রাতে আমি রাস্তায় ঘুরেছি। কারণ, আমি যে খাবার রান্না করেছি তা খুব জঘন্য হয়েছে। আর অরুণ সেই খাবার প্রতিবেশীর বেড়ালকে খেতে দিয়েছে এবং আমাকে চলে যেতে বলেছে। কিন্তু, আমি হাসতে থাকলাম। সেও আমার সঙ্গে হাসছে এবং হাসি থামাতেই পারছে না।

একজন লোভী মানুষের কিছু চুরি করা সহজ, কারণ তাতে তার খুব বেশি ক্ষতি হয় না। একজন ধনী ব্যক্তির কিছু চুরি করা সহজ, কারণ তার সব সম্পত্তি বৈধ নয়। কিন্তু, অরুণের মতো একজন গরিব মানুষের কিছু চুরি করা কঠিন।

অরুণ বিছানায় বসে পুরো পাঁচ মিনিট হাসল। পরে আমার মাথায় থাপ্পড় মেরে বলল, কিছু মনে করো না। আমি তোমাকে সকালে রান্না শেখাব।

সে আমাকে শুধু রান্না করতেই শেখায়নি, বরং আমার নাম এবং তার নাম লিখতে ও পড়তে শিখিয়েছে এবং বলেছে, শিগগির আমাকে পুরো বাক্য লেখা ও অঙ্ক শেখাবে। ওই মুহূর্তে আমার পকেটে কোনো টাকা ছিল না।

অরুণের সঙ্গে কাজ করাটা আমার জন্য বেশ আনন্দদায়ক ছিল। আমি সকালে চা তৈরির পর বাজার করতে যেতাম। বাজার করতে অনেক সময় নিতাম এবং প্রতিদিন প্রায় পঁচিশ পয়সা নিজের পকেটে পুরতাম। অরুণকে বলতাম, চালের দাম ৫৬ পয়সা প্রতি কেজি। যদিও আমি পঞ্চাশ পয়সায় কিনতাম। আমার ধারণা, সে এসব জানত। তবে, কখনও প্রশ্ন করত না বা কিছু বলত না। কারণ, অরুণ আমাকে নিয়মিত বেতন দিতে পারত না।

আমাকে পড়ালেখা শেখানোর জন্য অরুণের কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞ। আমি জানতাম যদি শিক্ষিত মানুষের মতো লিখতে পারি তবে অনেক কিছু অর্জন করতে পারব। এমনকি সৎ হওয়ার জন্য এটি একটি অনুপ্রেরণাও হতে পারে।

অরুণ অর্থ উপার্জন শুরু করে। সে এক সপ্তাহের জন্য ঋণ নিত এবং পরের সপ্তাহে পরিশোধ করত এবং পরবর্তী চেক নিয়ে চিন্তিত থাকত। চেক হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাইরে যেত এবং বিলাসিতায় সময় কাটাত।

একদিন সন্ধ্যায় সে অনেক টাকার বান্ডিল নিয়ে বাসায় ফিরল। আমি দেখলাম সে রাতে বিছানার মাথার পাশে গদির নিচে বান্ডিলগুলো রাখল। আমি প্রায় পনেরো দিন ধরে অরুণের বাসায় কাজ করছি এবং বাজার থেকে টাকা বাঁচানো ছাড়া আর খুব বেশি কিছু করতে পারি না। অবশ্য আরও অনেককিছু করার সুযোগ আমার হাতে আছে। আমার কাছে সামনের দরজার একটি চাবি আছে, অর্থাৎ অরুণ বাইরে গেলে আমি ঘরে প্রবেশ করতে পারি। সে আমার দেখা সবচেয়ে বিশ্বস্ত মানুষ। আর এ কারণেই আমি তার কিছু চুরি করার সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।

একজন লোভী মানুষের কিছু চুরি করা সহজ, কারণ তাতে তার খুব বেশি ক্ষতি হয় না। একজন ধনী ব্যক্তির কিছু চুরি করা সহজ কারণ তার সব সম্পত্তি বৈধ নয়। কিন্তু, অরুণের মতো একজন গরিব মানুষের কিছু চুরি করা কঠিন। এমনকি সে এমন একজন মানুষ যার কিছু চুরি হলেও তা নিয়ে সে মাথা ঘামাবে না। একজন ধনী ব্যক্তি বা লোভী ব্যক্তি বা সতর্ক ব্যক্তি বালিশ বা গদির নিচে টাকা রাখতে পারে না। বরং এগুলো কোনো নিরাপদ ও গোপন স্থানে রাখত। অথচ অরুণ তার টাকা এমন জায়গায় রেখেছে যেখান থেকে এগুলো সরানো আমার জন্য ছেলেখেলার মতো।

অরুণের গদির নিচে অনেক টাকা। যদি আমি এগুলো চুরি করি তাহলে শহর ছেড়ে চলে যেতে হবে। আমি অমৃতসরের সাড়ে দশটার এক্সপ্রেসটি ধরতে পারি।

আমি বারবার ভাবছিলাম, আমার এখন কিছু করার সময় এসেছে। আমি যদি টাকাগুলো না নিই, তাহলে সে এগুলো বন্ধুদের নিয়ে নষ্ট করবে। এমনকি আমাকেও দেবে না…

অরুণ ঘুমিয়ে আছে। চাঁদের আলো বারান্দা থেকে এসে বিছানার ওপরে পড়ছে। আমি মেঝে থেকে উঠে বসলাম। আমার গায়ে কম্বল জড়ানো। অরুণের গদির নিচে অনেক টাকা। যদি আমি এগুলো চুরি করি তাহলে শহর ছেড়ে চলে যেতে হবে। আমি অমৃতসরের সাড়ে দশটার এক্সপ্রেসটি ধরতে পারি।

কম্বল থেকে বেরিয়ে এসে দরজা দিয়ে পা পা টিপে টিপে অরুণের বিছানার কাছে গেলাম। অরুণের দিকে উঁকি মারলাম, সে শান্তিতে ঘুমাচ্ছে।

আমার একটি হাত গদির নিচে চলে গেল। আমার আঙ্গুলগুলো টাকার নোটের সন্ধান করছিল। অবশেষে টাকাগুলো খুঁজে পেলাম এবং গদির তলা থেকে বের করে আনলাম।

অরুণ ঘুমের মধ্যে দীর্ঘশ্বাস ফেলল এবং পাশ ঘুরে আমার দিকে ফিরল। আমার হাত তখন অরুণের বিছানায়। তার চুল আমার আঙ্গুলগুলো স্পর্শ করল। আমি খুব ভয় পেলাম। তবে, অরুণের ঘুম ভাঙেনি। এই সুযোগে দ্রুত এবং শান্তভাবে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ি।

রাস্তায় এসে দৌড়াতে শুরু করলাম। বাজারের রাস্তা ধরে দৌড়ে স্টেশনে এলাম। বাজারের সব দোকান বন্ধ, কিন্তু কিছু দোকানের জানালায় আলো জ্বলছে। আমার কোমরে টাকার বান্ডিল, পাজামার ফিতা দিয়ে এগুলো আটকে রেখেছি। মনে হলো থামতে হবে, নোটগুলো গুণতে হবে। এজন্য হয়তো আমি ট্রেন মিস করতে পারি। ঘড়িতে তখন ১০টা ২০ মিনিট বেজে গেছে। ধীরে ধীরে হাঁটতে শুরু করি এবং আমার আঙ্গুল নোটগুলোর ওপর ঘুরছিল। এখানে অনেক টাকা। আমি এক বা দুই মাস রাজপুত্রের মতো থাকতে পারব।

স্টেশনে পৌঁছে টিকিট কাউন্টারে যাইনি (আমি আমার জীবনে কখনও টিকিট কাটিনি)। সোজা প্ল্যাটফর্মে চলে গেলাম। অমৃতসর এক্সপ্রেস তখন ছেড়ে যাচ্ছে। এটি যথেষ্ট ধীরে ধীরে চলছে। আমি চাইলেই লাফ দিয়ে কোনো বগিতে উঠতে পারি। কিন্তু, দ্বিধাগ্রস্ত ছিলাম। একসময় ট্রেন চলেও গেল।

কিছু চুরি করা সহজ, কিন্তু ফিরিয়ে দেওয়া বেশ কঠিন। আমি যদি এখন বিছানার পাশে গিয়ে হাতে থাকা টাকা নিয়ে অথবা গদির নিচে হাত দিয়ে ধরা পড়ে যাই! এর একটাই উত্তর, আমি চুরি করেছি।

যখন ট্রেন চলে গেল তখন প্ল্যাটফর্মের শব্দ এবং ব্যস্ততা কমে এলো। নির্জন প্ল্যাটফর্মে একা দাঁড়িয়ে আছি। আমার কোমরে অনেকগুলো টাকা। যেগুলো আমি চুরি করেছি। রাতটা কোথায় কাটাব বুঝতে পারছি না। আমার কোনো বন্ধু নেই, কোনো বন্ধু বানাইনি। কোনো হোটেলে থাকতে চাইলাম না। কারণ এতে আমার অবস্থান স্পষ্ট হয়ে যাবে। এই শহরে আমি যাকে খুব ভালোভাবে চিনি সে হলো অরুণ। যার টাকা আমি চুরি করেছি এবং সেগুলো নিয়ে রাস্তায় ঘুরছি।

স্টেশন থেকে বেরিয়ে অন্ধকার নির্জন অলি-গলি রেখে ধীরে ধীরে বাজারের মধ্য দিয়ে হাঁটছি, অরুণের কথা ভাবছি। সে এখনও আনন্দের সঙ্গে ঘুমাচ্ছে। সে জানেই না তার সব টাকা চুরি হয়ে গেছে।

আমার অভিজ্ঞতা বলে যখন মানুষের কিছু চুরি হয়ে যায় তখন তাদের মুখে বিভিন্ন রকমের অভিব্যক্তি দেখা যায়। যেমন লোভী মানুষকে আতঙ্কিত দেখায়, ধনী ব্যক্তিকে রাগী দেখায়, গরীব মানুষকে ভীত দেখায়। কিন্তু আমি জানতাম অরুণ যখন চুরির বিষয়টি জানবে তখন তার মুখে আতঙ্ক, ক্রোধ বা ভয় কিছুই দেখা যাবে না। কিন্তু সে কষ্ট পাবে। তবে, সেই কষ্ট টাকা হারানোর জন্য নয়, তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য।

একসময় নিজেকে একটি মাঠে আবিষ্কার করলাম এবং একটা বেঞ্চে বসলাম। আজ রাতে একটু শীত পড়ছে, অরুণের কম্বল নিয়ে আসতে না পারার জন্য আফসোস করছি। আবার হালকা বৃষ্টি শুরু হয়েছে, আমি আরও অস্বস্তিতে পড়লাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই প্রবল বৃষ্টি শুরু হলো। আমার শার্ট এবং পাজামা শরীরের সঙ্গে আটকে গেলো। আগে প্রায়ই বেঞ্চে ঘুমাতাম। কিন্তু, অরুণের বারান্দায় ঘুমিয়ে সেই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে এসেছি।

আবার বাজারে ফিরে গেলাম। একটি বন্ধ দোকানের সিঁড়িতে বসলাম। আমার পাশে কয়েকজন ভবঘুরে শুয়ে আছে । তারা পাতলা কম্বলের মধ্যে নিজের শরীরকে শক্ত করে জড়িয়ে রেখেছে। ঘড়ির কাঁটায় মধ্যরাত। আমারা ভাবনায় কোমরে থাকা টাকার নোট। এগুলো বৃষ্টিতে ভিজে স্যাঁতসেঁতে হয়ে গেছে। এগুলো অরুণের টাকা। সকালে সে সম্ভবত আমাকে সিনেমা দেখার জন্য টাকা দেবে, কিন্তু আমার টাকা লাগবে না। কারণ আমার কাছে এখন অনেক টাকা আছে। এখন আমাকে তার খাবার রান্না, বাজার করা বা পড়ালেখা শেখার দরকার নেই। পড়ালেখা…

পড়ালেখার কথা তো আমি টাকার উত্তেজনায় ভুলে গিয়েছিলাম। অথচ আমি জানতাম যদি পড়ালেখা শিখি তাহলে একদিন আরও বেশি টাকা আয় করতে পারব। চুরি করা সহজ বিষয়। অবশ্য কখনও কখনও ধরাও পড়তে হয়। কিন্তু, সত্যিকারের একজন বড় মানুষ, একজন জ্ঞানী এবং সফল মানুষ হওয়ার জন্য কী এই টাকাগুলো যথেষ্ট? আমার অরুণের কাছে ফিরে যাওয়া উচিত। কারণ কীভাবে পড়তে হয় ও লিখতে তা আমাকে শিখতে হবে।

সম্ভবত আমার ফিরে যাওয়া অরুণের জন্যও আরও চিন্তার কারণ হবে। আমি জানি একজন সফল চোরকে অবশ্যই নিষ্ঠুর হতে হয়। কিন্তু আমি অরুণকে খুব পছন্দ করি । তার প্রতি আমার স্নেহ ও সহানুভূতি আছে। সর্বোপরি আমার পড়ালেখা শেখার আকাঙ্ক্ষা আমাকে তার কাছে ফিরিয়ে এনেছে।

খুব নার্ভাস হয়ে দ্রুত রুমে ফিরলাম। কিছু চুরি করা সহজ, কিন্তু ফিরিয়ে দেওয়া বেশ কঠিন। আমি যদি এখন বিছানার পাশে গিয়ে হাতে থাকা টাকা নিয়ে অথবা গদির নিচে হাত দিয়ে ধরা পড়ে যাই! এর একটাই উত্তর, আমি চুরি করেছি। তারপর সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে পাওয়া।

অরুণ তখনও ঘুমিয়ে আছে। ধীরে ধীরে তার বিছানার পাশে গেলাম। আমার আঙ্গুলের ওপর তার শ্বাস অনুভব করলাম। এক মিনিটের জন্য স্থির বসেছিলাম।

নির্লজ্জভাবে দরজা খুললাম এবং মেঘাচ্ছন্ন চাঁদের আলোতে দরজায় দাঁড়িয়ে রইলাম। ধীরে ধীরে আমার চোখ ঘরের অন্ধকারের সঙ্গে মানিয়ে গেল। অরুণ তখনও ঘুমিয়ে আছে। ধীরে ধীরে তার বিছানার পাশে গেলাম। আমার আঙ্গুলের ওপর তার শ্বাস অনুভব করলাম। এক মিনিটের জন্য স্থির বসেছিলাম। তারপর খুব শান্তভাবে গদির নিচে টাকার বান্ডিল রেখে দিলাম।

পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলাম, অরুণ চা বানিয়েছে। দিনের আলোতে তার মুখোমুখি হওয়া আমার জন্য কঠিন ছিল। সে আমার দিকে তার হাত বাড়িয়ে দিলো। তার হাতে এক বান্ডিল টাকার নোট। আমি অবাক হয়ে গেলাম। অরুণ বলল, গতকাল কিছু টাকা পেয়েছি। তুমি এখন নিয়মিত বেতন পাবে।

আমার হার্টবিট বেড়ে গেলে। টাকা ফেরত দিতে পেরে মনে মনে নিজেকে কৃতজ্ঞতা জানালাম। কিন্তু আমি যখন নোটের বান্ডিল নিয়েছিলাম তখন বুঝতে পারলাম অরুণ সবকিছু জানত। কারণে নোটটি তখনও গত রাতের বৃষ্টিতে ভেজা। অরুণ বলল, আজ আমি তোমাকে শুধু নাম নয়, একটু একটু করে সব পড়তে ও লিখতে শেখাব। সে চুরির বিষয়ে জানলেও, তার ব্যবহার বা কথাবার্তায় একটুও বুঝতে দিল না। আমি মুচকি হাসলাম। হাসিটি নিজেই এসেছিল, আমার অজান্তেই।

অনুবাদ: রবিউল কমল

Anuprerona
Anupreronahttps://www.anuperona.com
Read your favourite literature free forever on our blogging platform.
RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments