Friday, April 26, 2024
Homeরম্য গল্পমজার গল্পআগে পাঁচ ডলারে, এখন? - তারাপদ রায়

আগে পাঁচ ডলারে, এখন? – তারাপদ রায়

আগে পাঁচ ডলারে, এখন? - তারাপদ রায়

এক খদ্দের রেস্তোরাঁয় এসেছেন, এসে এক কাপ চায়ের অর্ডার দিয়েছেন।

একটু পরে চা এল। কিন্তু এ কী? চায়ের মধ্যে কী একটা পোকা ভাসছে।

খদ্দের বেয়ারাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এটা কী?”।

বেয়ারা ভাল করে পেয়ালার মধ্যে দেখে নিয়ে বললেন, “ঠিক বলতে পারছি না। আমি আবার পোকামাকড় ভাল চিনি না। দেখি, ম্যানেজারবাবুকে ডেকে দিচ্ছি, তিনি হয়তো বলতে পারবেন।”

‘ঠাকুমাকে বলা যায় এমন চারশোটি হাসির গল্প’ নামে যে সংকলনটি পাড়ার মোড়ের বইয়ের দোকানি আমার জন্যে বেছে রেখেছেন এই গল্প সেই বই থেকে।

এই গল্পটি পুরনো ধাঁচের। এইরকম ধাঁচের গল্প অনেক আছে, যেমন ‘বিদ্যাবুদ্ধি’-তে লিখেছিলাম।

রেস্তোরাঁতে খাবার অর্ডার দিতে গিয়ে বেয়ারার হাতে কালচে ঘায়ের মতো দাগ দেখে খদ্দের বেয়ারাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “তোমার কি একজিমা আছে?” বেয়ারা বিনীতভাবে বলেছিল, “না, স্যার। তবে কিমা আছে, কাটলেট আছে, চপ আছে, ফিশফ্রাই আছে।”

সে যা হোক, ক্লাইভ মারডক সম্পাদক এই চারশো মজার গল্পের মধ্যে ভাল গল্পের সংখ্যা খুব কম নয়।

এই বইয়ে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি বোঝাতে বলা হয়েছে, পূর্বে পাঁচ ডলারে যে জুতো জোড়া কেনা যেত, এখন সেটা মেরামত করতে পাঁচ ডলার লাগে।

এই বইতে আছে ভবিষ্যৎ আয়করদাতার পূরণের জন্যে আয়কর দফতরের একটি আগামি দিনের কাল্পনিক ফর্ম।

১। গত আর্থিক বছরে আপনি কত আয় করেছেন?

২। তার মধ্যে কত টাকা অবশিষ্ট আছে?

৩। উপরের (২) অর্থাৎ ব্যয় করার পরে আয়ের যে অবশিষ্টাংশ রয়েছে, সেটা অবিলম্বে ট্রেজারি চালান করে সরকারি কোষাগারে জমা দিন।

সতর্ক-বার্তা উপরের (৩) অমান্য করলে উপরের (২) সরাসরি বাজেয়াপ্ত হবে এবং তদপুরি জরিমানা হবে। ‘জরিমানা’ শব্দটি বড় অক্ষরে (বোল্ড টাইপে) ছাপা।

আয়কর দফতর নিয়ে আরও বেশ কয়েকটি জমাটি রসিকতা আছে এই বইতে।

এক ব্যক্তি আয়কর কর্তাকে পাঁচটি একশো ডলারের নোট খামে পাঠিয়ে স্বাক্ষরবিহীন পত্রে লিখেছেন, দু’ হাজার এক সালে আয়করে কিছু জোচ্চুরি করেছিলাম। সেকথা ভেবে এখন আমার রাতে ঘুম হয় না। পাঁচশো ডলার পাঠালাম। এর পরেও যদি ঘুম না-হয়, বাকি টাকা পাঠাব। ইতি জনৈক আয়কর দাতা।

দ্বিতীয় গল্পটি মর্মান্তিক। এক মুমূর্ষ ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর প্রিয় বন্ধু দেখা করতে এসেছেন। বোধহয় এটাই শেষ দেখা। মুমূর্ষ ভদ্রলোক প্রিয় বন্ধুকে বললেন, “ভাই, তোমাকে আমার একটা শেষ অনুরোধ আছে। আমার মৃত্যুর পরে আমাকে কিন্তু কবর দিয়ো না, আমাকে পোড়াবে। পোড়ানোর যে ছাইটুকু থাকবে সেটা একটা শক্ত জ্যাকেটে ভরে, সঙ্গে আমার এই চিঠিটা দিয়ে আয়কর প্রশাসনকে পাঠাবে।” দেখা গেল সেই চিঠিতে লেখা আছে, ‘আমার সর্বস্ব দিলাম।’

নীচে মুমূর্ষুর কাঁপা-কাঁপা সই।

আয়কর খুবই বিব্রতকর এবং বিরক্তিকর। আমরা বরং এই বইয়ের আর একটি গল্প স্পষ্ট করে দেখি।

একটা সিনেমার গল্প, একেবারে ঝকঝকে নতুন। আমি অন্তত আগে কখনও শুনিনি বা পড়িনি।

বহু বিজ্ঞাপিত, বহু প্রচারিত, ঢোল-ঢক্কা নিনাদিত একটি সিনেমা প্রথম দিনেই ফ্লপ । ইন্টারভ্যালের আগেই হল প্রায় খালি। দর্শকদের মধ্যে এক কুখ্যাত মস্তানও ছিলেন। তিনি কাউন্টারে গিয়ে একটা রিভলবার তাক করে ক্যাশিয়ারকে বললেন, “যাচ্ছেতাই বই। টাকা ফেরত দাও। শুধু আমার টাকা নয়, হলের সকলের টাকা ফেরত দাও।”

Anuprerona
Anupreronahttps://www.anuperona.com
Read your favourite literature free forever on our blogging platform.
RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments