Sunday, September 14, 2025
Homeরম্য গল্পছুঁচো - মজার গল্প

ছুঁচো – মজার গল্প

বাড়ির দাওয়ায় বসে এক বিটকেলে মাতবর তামাক সেবন করছিলেন। তাঁর মাথাভর্তি টাক। দাড়ি কামানো। মোচ আছে, কিছু লম্বা, কিন্তু ঝুলে পড়া নয়, খাড়া খাড়া। মুখে দুষ্টু হাসি। তার বাড়ির পাশেই সরকারি সড়ক। সেই সড়ক ধরে যাচ্ছিলেন গ্রামের আড্ডাবাজ, আমুদে কিন্তু তীক্ষ্ণ বুদ্ধির হাজাম তিতু মুন্সী। মাতবরকে তামাক খেতে দেখে তারও খুব ইচ্ছে হল তামাক খেতে।

সে বাদিকে বাঁক ঘুরে মাতবরের দাওয়ায় গিয়ে হাজির হলো। মাতবর তাকে হাতের ইশারায় বসতে বলে তামাক টানতে থাকে গভীর মনোযোগে। টানের গতিতে দ্রুতলয় লক্ষ্য করে হাজাম খুশি হয়; ভাবে সুখটান শেষে হুঁকোর নল এই বুঝি তার দিকে বাড়িয়ে দেবে।

না, তা দেয় না। চোখ বুজে ধীরলয়ে শাস্ত্রীয় বাজনার মত তার তামাক সেবন চলতে থাকে। টানের গতি দ্রুত ও দীর্ঘ লয় থেকে যখন নিচু গ্রামে (লয়) নামতে থাকে তখন হাজাম হাত বাড়ায়। কিন্তু মাতবর আবার তামাক টানার স্বরগ্রামের মিশ্রণে যে সুরলহরী তোলেন তাতে হাজাম অস্থির হয়ে ওঠে। আবার নিচু গ্রামে নামতেই হাজাম হাত বাড়ায়।

এবার হঠাৎ তামাক টানা থামিয়ে মাতবর বলেন : কিরে হাজাম বার বার হাত বাড়াচ্ছিস কেন, আমাকে কি দ্বিতীয়বার খতনা করবি নাকি? এমনিতেই এই বয়সে আছে কি নাই টের পাই না। তুই আবার কেটে নিলে যে একেবারে খাসি হয়ে যাবোরে! এ কথা বলে নিজের রসিকতায় মাতবর নিজেই অট্টহাসিতে ফেটে পড়েন।

হাজাম বলেঃ না হুজুর একটু তামাকু ইচ্ছা করেছিলাম।

মাতবরঃ তাই তো বলি, হাজাম কেন বেড়ালের মত বার বার নুলো বাড়িয়ে পাত থেকে মাছ তুলে নিয়ে যাবার ভঙ্গি করে।

হাজাম : ইঁদুর মনে করে থাবা মারতে চেয়েছিলাম। গোঁফ দেখে ভেবেছিলাম, হুলো (বড় ইঁদুর)। এখন দেখছি, ছুঁচোর (ছোট ইঁদুর) মত গোঁফ-বিকট দুর্গন্ধে হুঁকোর কাছেই ভিড়তে পারলাম না।

Anuprerona
Anupreronahttps://www.anuperona.com
Read your favourite literature free forever on our blogging platform.
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here


Most Popular

Recent Comments