সমরেশ মজুমদার (জন্ম: ১০ মার্চ ১৯৪২) বিখ্যাত ভারতীয় বাঙালি ঔপন্যাসিক। অনেক অসাধারণ লেখনীর শব্দের এই রূপকার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার অর্জন করেছেন। ১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কার,…
নেটিভ স্টেট অঞ্জনগড় আয়তন কাঁটায় কাঁটায় সাড়ে আটষট্টি বর্গমাইল। তবুও নেটিভ স্টেট, বাঘের বাচ্চা বাঘই। মহারাজ আছেন ফৌজ, ফৌজদার, সেরেস্তা, নাজারৎ সব আছে। এককুড়ির উপর মহারাজের উপাধি তিনি ত্রিভুবনপতি তিনি নরপাল, ধর্মপাল…
মর্তে খ্রিস্টজন্মের প্রায় দুহাজার বছর ও বুদ্ধজন্মের আড়াই হাজার বছরেরও বেশি অতিক্রান্ত হবার পরও রাজনীতিতে পঞ্চশীল, অশোকস্তম্ভ, ক্রিস্টমাস দ্বীপ, খ্রিস্টান ডিমোক্রেটিক পার্টি ইত্যাদি নাম ব্যবহার করে মানবজাতি এই দুই মহামানবের প্রতি আজও…
ফৌজি সংকেতে নাম ছিল বি এফ থ্রি থার্টি টু BF 3321 সেটা আদপে কোনো স্টেশনই ছিলো না, না প্ল্যাটফর্ম না টিকিটঘরা শুধু একদিন দেখা গেল ঝকঝকে নতুন কাঁটাতার দিয়ে রেল লাইনের ধারটুকু…
সমস্ত উচ্চ স্তরের আলাপ অর্থাৎ হাই লেভেল টক যখন ব্যর্থ হল তখন সকলে বুঝলেন যে মানুষের কথাবার্তায় কিছু হবে না, ঐশ্বরিক লেভেলে উঠতে হবে। বিশ্বমানবের হিতার্থী সাধুমহাত্মারা একযোগে তপস্যা করতে লাগলেন। অবশেষে…
বাড়ি থেকে বেরুতে প্রায়ই হোঁচট খাই। প্রথম পদক্ষেপেই পাথরটা তার অস্তিত্বের কথা প্রবলভাবে স্মরণ করিয়ে দেয়। কদিন ধরেই ভাবছি কি করা যায়। সেদিন বাড়ি থেকে বেরুবার আমার তেমন কোনো তাড়া ছিল না,…
সকালবেলায় আমার বাবা আজকাল তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরে। তাড়াতাড়ি মানে সাড়ে ছটা সাতটা। আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকে কোন জরুরী কাজ ছাড়া বাবাকে কোনদিন সাড়ে নটার আগে ফিরতে দেখিনি। অফিস থেকে বেরিয়ে এই…
ওরা আসে নিশুতি রাতে। প্রতি অমাবস্যায়। তখন ঘুটঘুটে অন্ধকার চারদিক শুনশান অদৃশ্যা মনে হয় এখানে কেউ বেঁচে নেই, কোনো বাড়িঘর নেই। বাতাসে গাছের ডগাগুলো কাঁপে, বাঁশবনে একটা বাঁশের সঙ্গে আর একটা বাঁশের…
আমি এবং আমার আত্মীয় পূজার ছুটিতে দেশভ্রমণ সারিয়া কলিকাতায় ফিরিয়া আসিতেছিলাম, এমন সময় রেলগাড়িতে বাবুটির সঙ্গে দেখা হয়। তাহার বেশভূষা দেখিয়া প্রথমটা তাঁহাকে পশ্চিমদেশীয় মুসলমান বলিয়া ভ্রম হইয়াছিল। তাহার কথাবার্তা শুনিয়া আরো…
বিদায় অনুষ্ঠানেও শীলাবতীর অভ্যস্ত সংযম আর গাম্ভীর্যের ব্যতিক্রম দেখল না কেউ। মেয়েরা তাঁকে ভক্তি করত এবং ভয় করত। শিক্ষয়িত্রীরা তাঁকে শ্রদ্ধা করতেন এবং ভয় করতেন। এই চিরাচরিত ভক্তি শ্রদ্ধা ভয় কাটিয়ে শেষ…
মেয়ে-স্কুলের গাড়ির সহিস আসিয়া হাঁকিল—“গাড়ি আয়া বাবা।” অমনি কালো গোরো মেটে শ্যামল কতকগুলি ছোট বড় মাঝারি মেয়ে এক-এক মুখ হাসি আর চোখভরা কৌতুক-চঞ্চলতা লইয়া বই হাতে করিয়া আসিয়া দরজার সমুখে উপস্থিত হইল…