সরস গল্প: কুত্তায় খাইয়া গেছে

'কুত্তায় খাইয়া গেছে' হাসির গল্প

গ্রামের ছাপরাঘরের এক হোটেল। তার একটা দিকে খানিকটা ভাঙা। সেই ভাঙা জায়গা দিয়ে বেড়াল, এমনকি কুকুর পর্যন্ত ঢুকে যেতে পারে। হোটেলের মালিক ইংরাজ আলী খুব কৃপণ। একেবারেই যাকে বলে হাড় কঞ্জুষ। তাই নতুন বেড়া না লাগিয়ে ভাঙা বেড়ার জায়গায় একখণ্ড কাঠ ফেলে রাখে। সামনের ঝাপ অবশ্য ঠিকঠাক শক্তপোক্ত আছে। ভাঙা বেড়া ইংরাজ আলী ঠিক করে না; কারণ দিনের বেলা ওই ভাঙা দিয়ে কুকুর-বেড়াল ঢুকলে তা দেখা যাবে এবং দোকানের কর্মচারী হরমুজ আলী তা তাড়াবে।

আর রাতে বেড়ার কাঠখণ্ড ঘেঁষে হরমুজ আলীর বিছানা এমনভাবে পাতা হয় যে কুকুর-বেড়াল-শেয়াল দূরে থাক, ইঁদুর-ছুঁচো পর্যন্ত ঢুকতে পারে না। সেই হোটেল ভালই চলে। চটপটে, পরিশ্রমী কর্মচারী হরমুজ, খুব সাবধান। আর আস্ত ট্যাটনও। আর রস-রসিকতায় আগের দিনের ঢাকাইয়াদের মতো সরস। কথা মাটিতে পড়া দায়। একদিনের কথা। এক খরিদ্দার এলো দোকানে। ওই দোকানের নানা খাবারের মধ্যে মোটা কড়া পাকের দুধের সর বা মালাইয়ের খুব নাম ছিল। নতুন খরিদ্দারের তা দেখে খুব পছন্দ হয়ে গেল।

সে বলে : আমি এই মালাই খাব। এর দাম কত?
হরমুজ : দাম তিন টাকা।

খরিদ্দার : নয় ট্যাকা সের দুধ, আর এই মালাইয়ের দাম তিন ট্যাক্যা?

হরমুজ : হ ভাই, এক পোয়া দুধ জ্বাল দিয়া ওই মালাই তৈরি হেছে। আমরা পাইকারি দামে দুধ পাই, তাই তিন টাকায় দিবার পারি। অতি সামান্য লাভ থাকে।

খরিদ্দার : বেশি চাপা মাইরো না–মুখ বেচায় ওস্তাদ। ওই মালাইয়ে এক পোয়ার বেশি দুধ লাগে নাই। দেড় টাকা দিমু, দিবা?

হরমুজ : দামাদামি নাই। ইংরাজ আলীর দোকানে বিলাতের মতো এক দাম। হে ইংরেজ না অইলেও ইংরাজ নাম কি আর এমতে রাখছে!

খরিদ্দার : হাউসে আর বাঁচি না। রাখ তোমার ইংরাজ আর বিলাত। দেড় ট্যাকায় দিবা কিনা কও! হরমুজ দ্রুত গিয়ে ভাঙা বেড়ায় ঠেকনা দেয়া কাঠ সরায়। তাতে যে ফাঁকের সৃষ্টি হয় তা দিয়ে কুকুর ঢুকতে পারবে।

তারপর খরিদ্দারের কাছে এসে বলে : খান, দিমু দেড় টাকাতেই। মালিক জিগাইলে কমু কুত্তায় খাইয়া গেছে।

Facebook Comment

You May Also Like

About the Author: eBooks

Read your favourite literature free forever on our blogging platform.