Monday, August 18, 2025
Homeগোয়েন্দা গল্পশার্লক হোমস: দ্য ফাইভ অরেঞ্জ পিপস

শার্লক হোমস: দ্য ফাইভ অরেঞ্জ পিপস

শার্লক হোমস: দ্য ফাইভ অরেঞ্জ পিপস

১৮৮২ থেকে ১৮৯০ সালের মধ্যে শার্লক হোমস যেসব রহস্য সমাধানের ভার হাতে নিয়েছে, তার মধ্যে কয়েকটিতে তার বিশ্লেষণী ক্ষমতা চূড়ান্তভাবে প্রকাশের সুযোগ পায়, কয়েকটিতে তার ক্ষমতা থই পায়নি–অমীমাংসিত থেকে গিয়েছে। আবার কয়েকটিতে আংশিক সমাধান ঘটেছে। এই শেষের কেসগুলোর মধ্যে একটা বেশ চমকপ্রদ। ঘটনাচক্র কিন্তু আজও পুরো স্পষ্ট হয়নি–হবে বলেও আর মনে হয় না।

১৮৮৭ সালের সেপ্টেম্বর শেষ হতে চলেছে। প্রচণ্ড ঝড় আর বৃষ্টি লন্ডন শহরের ওপর দাপাদাপি করে চলেছে সারাদিন। বউ বাপের বাড়ি যাওয়ায় আমি বেকার স্ট্রিটে এসে উঠেছি দিন কয়েকের জন্যে। চুল্লির ধারে বসে বই পড়ছি। হোমসও মুখখানা কালো করে বসে আছে। মেজাজ বেশ খিটখিটে।

এমন সময় ঘণ্টাধ্বনি শোনা গেল সদর দরজায়।

হোমস বললে, এ সময়ে কেউ যদি সমস্যা নিয়ে দ্বারস্থ হয়, বুঝতে হবে সে-সমস্যা খুবই গুরুতর।

করিডরে পায়ের আওয়াজ শুনলাম। তারপরেই দরজায় টোকা পড়ল।

আসুন, বলল হোমস।

বছর বাইশের এক যুবক ঘরে ঢুকল। রুচিবান, ফিটফাট, খানদানি চেহারা। হাতে ভেজা ছাতা, গায়ে জলঝরা বর্ষাতি। চোখ উদবিগ্ন, মুখ ফ্যাকাশে। খুব দুশ্চিন্তায় আছে যেন।

চোখে সোনার পাসনে চশমা লাগিয়ে বলল, এই ঝড়বাদলাকে গায়ে নিয়ে হুট করে ঘরে ঢুকে পড়ার জন্যে ক্ষমা করবেন।

যুবকের ছাতা আর বর্ষাতি নিয়ে আংটায় ঝুলিয়ে দিল হোমস।

বলল, দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চল থেকে আসছেন দেখছি।

আজ্ঞে হ্যাঁ, হর্সহ্যাম থেকে আসছি। মেজর নেডেগাস্ট আপনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ, তাকে মস্ত কেলেঙ্কারি থেকে আপনি বাঁচিয়েছিলেন। উনিই বললেন, আপনি কখনো হারেন না।

অতিরঞ্জন করেছেন। মোট চারবার হেরেছি আমি। তিনবার পুরুষের কাছে একবার একটি মহিলার কাছে।

তার চেয়ে অনেক বেশিবার জিতেছেন। আমার কেসেও আপনি তাই হবেন এই আশা নিয়ে আমি এসেছি। ব্যাপারটা খুব রহস্যময়। আমাদের পরিবারে এ-রকম দুর্বোধ্য ব্যাপার কখনো ঘটবে ভাবতে পারিনি।

কৌতূহল বাড়িয়ে দিলেন দেখছি। বলুন আপনার দুর্বোধ্য কেস–শোনা যাক।

চেয়ার টেনে নিয়ে আগুনের সামনে পা মেলে বসল যুবকটি।

বলল, আমার নাম জন ওপেন-শ। যে-কেস নিয়ে আপনার কাছে এসেছি, তার জের চলেছে বাপ-কাকার আমল থেকে।

আমার বাবারা দু-ভাই। এলিয়াস আমার কাকা, জোসেফ আমার বাবা। কভেন্ট্রিতে সাইকেলের টায়ারের কারখানা চালিয়ে বাবা প্রচুর পয়সা করেন। পরে মোটা টাকায় কারবার বেচে দেন এবং বাকি জীবনটা স্বচ্ছন্দে কাটাবেন স্থির করেন।

কাকা বয়সকালে আমেরিকা গিয়েছিলেন। যুদ্ধের সময়ে কর্নেল হয়েছিলেন।

যুদ্ধ শেষ হলে ফ্লোরিডায় বাড়ি ফিরে যান। বছর তিন চার সেখানে থাকার পর ১৮৬৯ কি ৭০ সালে ফিরে আসেন হর্সহ্যামের সাসেক্সে। জমিজমা কিনে বসবাস শুরু করেন। আমেরিকায় টাকা করেছিলেন, কিন্তু থাকতে পারেননি নিগ্লোবিদ্বেষের জন্যে। নিগ্রোদের ভোট দেওয়ার অধিকার তিনি মানতে পারেননি। কাকা ছিলেন বদমেজাজি, অসামাজিক আর ঘরকুনো। খুব মদ খেতেন, তামাক খেতেন, কারো সঙ্গে দেখা করতে চাইতেন না–বাবার সঙ্গেও না। বাড়িতেই থাকতেন–নয়তো বাড়ির পাশের মাঠে ময়দানে প্রাত্যহিক ব্যায়াম সেরে নিতেন।

আমাকে কিন্তু স্নেহ করতেন কাকা। ইংলন্ডে আসার আট-নয় বছর পর বাবাকে বলে আমাকে ওঁর বাড়িতেই রেখেছিলেন। চাকরবাকর আর বাইরের লোকের সঙ্গে কথাবার্তা ব্যাবসার আলাপ আমিই চালাতাম। চাবি-টাবি সব আমার কাছেই থাকত। মাত্র যোলো বছর বয়সেই বলতে পারেন বাড়ির কর্তা হয়ে বসেছিলাম। সর্বত্র অবাধ গতি ছিল আমার ছাদের চিলেকোঠার ঘরটা ছাড়া। চাবির ফোকর দিয়ে উঁকি মেরে দেখেছি সে-ঘরে রাশি রাশি ভাঙা

তোরঙ্গ আর কাগজের তাড়া ছাড়া কিছুই নেই।

১৮৮৩ সালের মার্চ মাসের সকাল বেলা আমি আর কাকা টেবিলে বসে আছি, এমন সময়ে একটা চিঠি এল কাকার নামে। নির্বান্ধব ছিলেন বলে ওঁর নামে চিঠিপত্ৰ বড়ো একটা আসত না। খামখানা তুলে নিয়ে বললেন, পন্ডিচেরি পোস্ট অফিসের ছাপ দেখেছি–ভারতবর্ষ থেকে এসেছে।

বলে, খামের মুখ ছিঁড়লেন। ভেতর থেকে শুধু পাঁচটা শুকনো খটখটে কমলাবিচি ঝরে পড়ল টেবিলে–আর কিছু না।

আমি হেসে ফেললাম পত্ৰলেখকের রসিকতা দেখে। কিন্তু কাকার মুখ ছাইয়ের মতো ফ্যাকাশে হয়ে গেল। নিঃসীম আতঙ্কে চোয়াল ঝুলে পড়ল, চোখ যেন কোটর থেকে ঠেলে বেরিয়ে এল।

বললেন বিকট ভাঙা গলায়, K.K.K.! এবার আর রক্ষে নেই আমার। পাপের সাজা পেতেই হবে!

আমি তো অবাক। বললাম, কাকা ব্যাপার কী? এসব কী?

মৃত্যু! মৃত্যু! বলতে বলতে টেবিল ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন কাকা। ছুটে নিজের ঘরে চলে গেলেন। ভয়ের চোটে আমার বুক ধড়াস ধড়াস করতে লাগল। খামটা তুলে নিয়ে দেখলাম, আঠা দিয়ে জোড়া মুখের কাছে লাল কালিতে K অক্ষরটা তিনবার লেখা–ভেতরে ওই কমলার পাঁচটি বিচি ছাড়া কিছু নেই।

এর সঙ্গে মৃত্যুর কী সম্পর্ক থাকতে পারে ভেবে না-পেয়ে ওপরে যাচ্ছি, দেখলাম সিঁড়ি বেয়ে কাকা নামছেন। হাতে একটা জংধরা চাবি চিলেকোঠা খুলেছিলেন নিশ্চয় আর একটা ছোটো পেতলের বাক্স।

বললেন, এবার ওদের টেক্কা দোব। জন, মেরিকে বললো আমার ঘরে আগুন জ্বেলে দিতে। আর তুমি উকিল ফোর্ডহ্যামকে ডাকতে পাঠাও।

উকিল এল। কাকার ঘরে আমার তলব পড়ল। দেখলাম, আগুনের চুল্লির লোহার ঝাঝরির ওপর অনেক কাগজ পোড়া ছাই পড়ে আছে। পাশেই সেই পেতলের বাক্স ডালা খোলা অবস্থায় রয়েছে। আঁতকে উঠলাম ডালার ওপর K অক্ষরটা তিনবার খোদাই করা দেখে।

আমি ঘরে ঢুকতেই কাকা বললেন, শোনো জন, আমার সমস্ত সম্পত্তি দাদাকে দিয়ে যাচ্ছি। তার মানে তুমিই সব পাবে। যদি বোঝ শান্তিতে ভোগ করতে পারছ না–তোমার যে পরম শত্রু, তাকে সব দিয়ে দিয়ো। সাক্ষী হিসেবে উইলে সই করো।

আমি তো ভয়ে সিটিয়ে গেলাম কথার ধরন শুনে। সই দিলাম বটে, কিন্তু সেইদিন থেকে কাঠ হয়ে রইলাম। অষ্টপ্রহর কাকার হঠাৎ পরিবর্তন দেখে। নেশা করা, ঘরের মধ্যে নিজেকে চাবি দিয়ে রাখা, কারো সঙ্গে দেখা না-করা, আগের চাইতে বাড়ল। নতুন উপসর্গের মধ্যে দেখা গেল চেঁচামেচি। মাঝে মাঝে মদে চুর হয়ে রিভলভার হাতে বেরিয়ে এসে বাড়ির সামনে মাঠে ছুটতেন আর গলা ফাটিয়ে চেঁচাতেন। কারো ধার ধারেন না তিনি, কারো ভয়ে জুজু হয়ে থাকতে চান না। ঘোর কেটে গেলেই কিন্তু ফের ঘরে ঢুকে চাবিবন্ধ করে দিতেন। দারুণ শীতেও তখন তাঁকে দেখেছি ঘেমে-নেয়ে যেতে। ভয় যে রক্তে বাসা নিয়েছে, তা ওই মুখ দেখলেই বোঝা যেত।

একদিন রাত্রে এইরকম মাতলামি করতে করতে ঘর থেকে ছিটকে বেরিয়ে গেলেন আর ফিরে এলেন না। বাগানের ডোবায় মাত্র দু-ফুট জলে মুখ গুঁজে পড়ে থাকতে দেখা গেল তাঁকে। শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। সাম্প্রতিক পাগলামির বৃত্তান্ত শুনে জুরি বললেন আত্মহত্যা। আমার মনে কিন্তু ধোঁকা থেকে গেল। মৃত্যুর খপ্পর থেকেই বাঁচবার জন্যে উনি পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলেন। শেষকালে কিনা ঘর থেকে বেরিয়ে গিয়ে সেই মৃত্যুর খপ্পরেই পড়লেন।

যাই হোক, উইল অনুসারে কাকার সম্পত্তি আর ব্যাঙ্কে গচ্ছিত প্রায় হাজার চোদ্দো পাউন্ড বাবা পেলেন।

এই পর্যন্ত শুনে হোমস বললে, এ-রকম অদ্ভুত কাহিনি আগে কখনো শুনিনি। আচ্ছা, চিঠিখানা উনি কবে পেয়েছিলেন? মৃত্যু বা আত্মহত্যাটা কোন তারিখে হয়েছিল মনে আছে?

চিঠি এসেছিল ১৮৮৩ সালের ১০ মার্চ, মারা গেলেন ২ মে রাত্রে–মানে, ঠিক সাত সপ্তাহ পরে।

তারপর কী হল?

সম্পত্তি বুঝে নেওয়ার পর আমার কথায় চিলেকোঠা তন্নতন্ন করে খুঁজলেন বাবা। সেই পেতলের বাক্সটা পাওয়া গেল। ডালার ভেতর দিকে একটা কাগজ সাঁটা। তাতে লেখা K.K.K.–তার নীচে লেখা পত্র, স্মারকলিপি, নিবন্ধ, রসিদ। কিন্তু ওই ধরনের কোনো কাগজ বাক্সে নেই–নিশ্চয় সব পুড়িয়ে ফেলেছেন। এ ছাড়া ঘরের মধ্যে যা পাওয়া গেল, তা সবই তার সৈনিকজীবন সংক্রান্ত। আর কিছু রাজনীতির কাগজপত্র।

১৮৮৫ সালের জানুয়ারি মাসে প্রথম সপ্তাহে ব্রেকফাস্ট খেতে বসেছি আমি আর বাবা, এমন সময়ে একটা খাম এল তার নামে। ছিড়েই চেঁচিয়ে উঠলেন।

দেখলাম, ভয়ে চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেছে। এতদিন যা নিয়ে হাসিঠাট্টা করেছিলেন, এখন তাই দেখে হতভম্ব হয়ে গেছেন। হাতের তেলোয় রয়েছে শুধু পাঁচটা কমলা-বিচি।

তোতলাতে তোতলাতে কোনোমতে বললেন, এ… এ আবার কী!

K.K.K. নাকি? গলা শুকিয়ে এল আমার।

খামের ভেতর দেখে বললেন, হ্যাঁ, হ্যাঁ, এই তোর অক্ষরটা তিনবার লেখা রয়েছে। তার ওপরে এসব আবার কী লিখেছে?

ঘাড় বাড়িয়ে পড়লাম, সূর্য-ঘড়ির ওপর কাগজগুলো রাখে।

কাগজই-বা কী, সূর্য-ঘড়িই-বা কোথায়? বললেন বাবা।

সূর্য-ঘড়ি বাগানে একটা আছে বটে, কিন্তু কাগজ তো সব পুড়িয়ে ফেলেছেন কাকা।

যত্তো সব! অনেকটা সামলে নিয়ে বাবা বললেন, এটা সভ্য দেশ। গাড়োয়ানি ইয়ার্কির জায়গা নয়। কোত্থেকে এসেছে চিঠিটা?

ডাকঘরের স্ট্যাম্প দেখে বললাম–ডান্ডি থেকে!

ফেলে দাও! ইয়ার্কির আর জায়গা পায়নি।

পুলিশে খবর দেওয়া দরকার।

ছাড়ো তো! লোক হাসাতে হবে না।

আমি নিজে খবর দিতে চাইলাম–বাবা বেঁকে বসলেন, চিরকাল বড়ো গোঁয়ার। আমি কিন্তু সেইদিনই অমঙ্গলের অশনি সংকেত পেলাম চিঠিখানার মধ্যে।

চিঠি পাওয়ার তিন দিন পরে বাবা ছেলেবেলার বন্ধু মেজর ফ্ৰিবাডির সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। দ্বিতীয় দিনে টেলিগ্রাম এল মেজরের কাছ থেকে। গিয়ে শুনলাম বাবা আর নেই। খাদ থেকে পড়ে মারা গেছেন। জুরিরা বললেন, দুর্ঘটনা। আমার মন বলল, হত্যা। অথচ কোনো পায়ের ছাপ কোথাও নেই, আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই, রাস্তাঘাটেও অচেনা মুখ দেখা যায়নি। ষড়যন্ত্র যে ক্রমশ চেপে বসছে, সমস্ত সত্তা দিয়ে তা উপলব্ধি করলাম।

এইভাবেই অনেক দুর্ভাগ্যের মধ্যে দিয়ে সম্পত্তি এল হাতে। বলতে পারেন, কেন বেচে দিয়ে সরে পড়লাম না। কিন্তু আমার মন বলছে, পালিয়ে গিয়ে কাকার অতীতের জেরকে ফাঁকি দেওয়া যাবে না।

বাবার রহস্যজনক মৃত্যুর পর দু-বছর আট মাস বেশ সুখেই কাটল। কমলবিচির আতঙ্ক মন থেকে মুছে গেল। ভাবলাম বুঝি, অভিশাপটা শেষ পর্যন্ত রেহাই দিল বংশের শেষ পুরুষকে।

কিন্তু ভুল… ভুল… সব ভুল। কাল সকালে আবার এসেছে সেই খাম। এই দেখুন।

ওয়েস্টকোটের পকেট থেকে একটা খাম বার করে উপুড় করল যুবাপুরুষ। টেবিলে কড়মড় করে ঠিকরে পড়ল পাঁচটা শুকনো কমলালেবুর বিচি।

বলল, ডাকঘরের স্ট্যাম্প মারা হয়েছে লন্ডনের পুব অঞ্চলে। ভেতরে লেখা K.K.K.–কাগজপত্র সূর্য-ঘড়ির ওপর যেন থাকে।

চিঠি পেয়ে কী করলেন?

কিছুই না।

সে কী! কিচ্ছু করেননি?

কাঁপা হাতে মুখ ঢেকে শিউরে উঠল জন ওপেন-শ, কী করব বলতে পারেন? একটা কুটিল চক্রান্ত আষ্টেপৃষ্ঠে পেঁচিয়ে ধরেছে আমাকে বড়ো অসহায়, বড়ো দুর্বল আমি। এমন একটা ক্রুর কুটিল অমঙ্গল আমাকে শেষ করে আনছে যার খপ্পর থেকে রেহাই বাবা কাকারাও পায়নি–আমিও পাব না।

আপনি কি চুপ করবেন? চিৎকার করে ওঠে শার্লক হোমস। এখন কি ভেঙে পড়ার সময়? বাঁচতে যদি চান, তো উঠে-পড়ে লাগুন।

পুলিশের কাছে ধরনা দিয়েছিলাম।

কী বলল তারা?

হেসেই উড়িয়ে দিল। বলল, ঠাট্টা করেছে কেউ।

ইডিয়ট! মানুষ যে এত বোকা হতে পারে ভাবাও যায় না।

অবশ্য সঙ্গে একজন কনস্টেবল দিয়েছে।

সঙ্গে এনেছেন তো?

না, বাড়িতে রেখে এসেছি। সেইরকমই অর্ডার আছে তার ওপর।

এবার ভীষণ রেগে গেল হোমস। শূন্যে মুষ্টি নিক্ষেপ করে চিৎকার করে বললে, তাহলে এখানে আসতে গেলেন কেন? এলেনই যদি তো চিঠি পাওয়ার সঙ্গেসঙ্গে এলেন না কেন?

আপনার নাম তখনও শুনিনি। মেজর প্রেনডেগাস্টের কাছে শুনেই দৌড়ে আসছি।

খুব করেছেন। রাগে গরগর করতে করতে বলল হোমস। চিঠি পাওয়ার পর দু-দুটো দিন বেবাক বসে কাটিয়েছেন। জোগাড়যন্ত্র আগেই করা উচিত ছিল। যত্তো সব! ছোটোখাটো সূত্র-টুত্র কিছু দিতে পারেন? ব্যাপারটা আন্দাজ করার মতো যা হয় কিছু?

পকেট থেকে একটা নীল কাগজের টুকরো বার করে টেবিলে রাখল জন।

কাকা যেদিন কাগজ পোড়ান, সেদিন কীভাবে জানি না এই কাগজটা উড়ে এসে মেঝেতে পড়েছিল। ছাইয়ের মধ্যেও এইরকম নীলচে রঙের আধপোড়া কাগজের অনেক টুকরো দেখেছিলাম। এই কাগজটাও মনে হয় ওইসবের মধ্যেই ছিল।

বাতির আলোয় ছেড়া কাগজটার ওপর আমরা দুই বন্ধু হুমড়ি খেয়ে পড়লাম। একটা দিকই ভেঁড়া হয়েছে–যেন খাতার পাতা ছিড়ে নেওয়া হয়েছে। ওপরে লেখা মার্চ, ১৮৬৯ তলায় একট হেঁয়ালি :

৪ঠা ।। হাডসনের মত পালটায়নি। এসেছিল।

৭ই ।। বিচি পাঠানো হল ম্যাকাউলি, প্যারামোর আর জন সোয়েনকে।

৯ই ।। ম্যাকাউলি পরিষ্কার।

১০ই ।। জন সোয়েন সাফ।

১৩ই।। প্যারামোরকে দেখে এলাম। ঠিক আছে।

কাগজটা ফিরিয়ে দিল হোমস।

বলল, নষ্ট করার মতো সময় আর নেই। এক্ষুনি বাড়ি গিয়ে কোমর বেঁধে লেগে যান। কী করব? এই যে কাগজটা, এই সেই পেতলের বাক্সে রাখবেন। আর একটা কাগজে লিখবেন–সব কাগজ কাকা পুড়িয়ে ফেলেছেন, এইটেই কেবল রয়ে গেছে। লিখে কাগজটাকে পেতলের বাক্সে রেখে সবসুদ্ধ সূর্যঘড়ির ওপর সঙ্গেসঙ্গে রেখে আসবেন।

বেশ, তাই করব।

এ ছাড়া করণীয় আর কিছুই এখন নেই। আগে নিজে বাঁচুন, পরে বাপ কাকার মৃত্যুরহস্যের কিনারা করতে যাবেন।

উঠে দাঁড়াল জন, আপনি আমাকে নতুন শক্তি দিলেন।

একদম সময় নষ্ট করবেন না। মনে রাখবেন, মাথার ওপর সাংঘাতিক বিপদের খাঁড়া নিয়ে এখানে আপনি এসেছেন। সত্যিই জীবন বিপন্ন আপনার। বাড়ি ফিরবেন কী করে?

ট্রেনে।

ন-টা এখনও বাজেনি।  রাস্তায় যদিও লোক থাকবে, তাহলেও খুব একটা নিশ্চিন্ত থাকতে পারছি না।

সঙ্গে হাতিয়ার আছে।

চমৎকার। কাল থেকে শুরু করব আপনার রহস্য সমাধান।

হর্সহ্যামে আসছেন?

না। রহস্যের চাবিকাঠি হর্সহ্যামে নেই–লন্ডনে রয়েছে। এখানেই কিনারা করব।

ঠিক আছে। দু-একদিনের মধ্যেই বাক্সের খবর দিয়ে যাব আপনাকে।

হ্যান্ডশেক করে বিদায় নিল যুবাপুরুষ। বাইরে তখন দামাল ঝড় আর পাগলা বৃষ্টির তাণ্ডব নাচ চলছে। খটাখট ঝমাঝম শব্দ শোনা যাচ্ছে জানলায়।

আগুনের দিকে তাকিয়ে অনেকক্ষণ নিশ্চুপ হয়ে বসে রইল শার্লক হোমস। তারপর তাম্রকুট সেবন করে চলল শিবনেত্র হয়ে।

শেষকালে বললে, ওয়াটসন, সাইন অফ দি ফোর মামলার পর এ-রকম ভয়ংকর বিচিত্র মামলা আর হাতে আসেনি আমার।

জন ওপেন-শ-র মাথায় কোন বিপদের খাঁড়া ঝুলছে বলো তো?

ভায়া, যুক্তিবিদ্যায় তাকেই পারঙ্গম বলব যে ঘটনা-শৃঙ্খলের একটা আংটা দেখেই শৃঙ্খলের শেষ পর্যন্ত আঁচ করতে পারে। অস্থিবিদ্যায় যিনি পণ্ডিত, তিনি যেমন কঙ্কালের একটা হাড় দেখেই সব হাড়ের বর্ণনা দিতে পারেন–এও তেমনি একটা উঁচুদরের আর্ট। এ-আর্টে বড়ো আর্টিস্ট হতে হলে দরকারি সব খবর মগজে জমিয়ে রাখা দরকার। মার্কিন বিশ্বকোষের K খণ্ডটা তাক থেকে নামাও। এবার ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করা যাক। কর্নেল ওপেন-শ আমেরিকা ছেড়ে হঠাৎ চলে এলেন কেন? ইংলন্ডের পল্লিঅঞ্চলে নির্জনবাস শুরু করলেন কেন? বাড়ি ছেড়ে বেরোনো বন্ধ করলেন কেন? নিশ্চয় কারো ভয়ে–তাই নয় কি? ভয়টা কী ধরনের, এই চিঠিগুলো থেকেই আঁচ করা যায়। পোস্ট অফিসগুলোর ছাপ মনে আছে?

প্রথমটা পণ্ডিচেরির, দ্বিতীয়টা ডান্ডির, তৃতীয়টা পূর্ব লন্ডনের।

এ থেকে কী আন্দাজ করা যায়?

সবগুলোই তো দেখছি জাহাজঘাটা। চিঠির লোক জাহাজে বসে চিঠি লিখেছে।অপূর্ব! এই তো বেরিয়ে গেল একটা সূত্র। এবার দেখো আর একটা ইঙ্গিতময় ব্যাপার। পন্ডিচেরি থেকে হুমকি দিয়ে খুন করতে সময় লেগেছে সাত সপ্তাহ। কিন্তু ডান্ডি থেকে হুমকি দিয়ে খুন করেছে মাত্র তিন চার দিনে। বলো কী বুঝলে এ থেকে?

আসতে সময় লেগেছে।

চিঠিকেও তো সেই পথেই আসতে হয়েছে।

তাহলে?

ভায়া, হুমকি যে দিয়েছে, সে এসেছে এমন একটা জাহাজে যে-জাহাজ চিঠি-বওয়া জাহাজের চেয়ে আস্তে চলে। মানে, পাল তোলা জাহাজ। চিঠি এসেছে কলে-চলা জাহাজে।

তা হতে পারে।

হতে পারে না, তাই হয়েছে। ওপেন-শকে এই কারণেই পইপই করে হুঁশিয়ার করলাম–জীবন তার সত্যিই বিপন্ন। কেন জান? ওর চিঠিটা এসেছে পূর্ব-লন্ডন থেকে। তার মানে আর সময় নেই।

সর্বনাশ! কিন্তু এই অমানুষিক অত্যাচারের কারণটা কী বলতে পার?

কারণ ওই কাগজপত্র। এই হুমকি আর খুনের পেছনে একজন নেই–অনেকজন আছে। চিহ্ন বা প্রমাণ না-রেখে এইভাবে পর-পর দুটো খুন করা আনাড়ি বা বোকার পক্ষে সম্ভব হয়। এরা গোঁয়ার, বুদ্ধিমান, ধনবান। বাক্সের কাগজপত্র তারা ফিরে চায়–যার কাছেই থাকুক না কেন। কাজেই K.K.K. অক্ষর তিনটে কোনো বিশেষ একজনের নামের আদ্যক্ষর নয়–একটা সংস্থার নাম।

কী সংস্থা?

ঝুঁকে পড়ল হোমস।

বলল, ওয়াটসন, কু-ক্লুক্স-ক্ল্যানয়ের নাম কখনো শুনেছ?

না।

বিশ্বকোষের পাতা উলটোল বন্ধুবর।

বলল, এই দেখো কু ক্লুক্স ক্ল্যান! আগ্নেয়াস্ত্রের ট্রিগার টেপবার সময় একরকম ধাতব শব্দ হয় তার সঙ্গে মিল রেখেই এই নামের সৃষ্টি। আমেরিকায় গৃহযুদ্ধের পর পতন ঘটে ভয়ংকর এই সংস্থাটির। উদ্দেশ্য নিগ্রো হয়েও যারা ভোট দিতে চায়, তাদের মধ্যে সন্ত্রাস সৃষ্টি করা। যাকে দেশ থেকে তাড়াতে অথবা খুন করতে চাইত তার কাছে আগে হুমকি পাঠানো হত অদ্ভুত চিহ্ন মারফত। কখনো কমলা-বিচি, কখনো তরমুজ-বিচি, কখনো ওক-গাছের পাতা। হুমকি চিহ্ন পেয়ে যারা তোয়াক্কা করত না, অদ্ভুতভাবে তাদের সরিয়ে দেওয়া হত ধরাধাম থেকে। অনেক চেষ্টা করেও দমন করা যায়নি সংস্থাটিকে–আকাশে বজ্রের মতোই এরা ছিল ভয়ংকর আর অমোঘ। ১৮৬৯ সালে সংস্থাটি আচমকা টুকরো টুকরো হয়ে যায় কারণ জানা যায়নি। মাঝে মাঝে অবশ্য মাথা চাড়া দিয়েছে বিক্ষিপ্তভাবে।

বিশ্বকোষ বন্ধ করে হোমস বললে, কর্নেল ওপেন-শ আমেরিকা থেকে চলে আসেন ১৮৬৯ অথবা ৭০ সালে। সংস্থাটি ভেঙেছে ১৮৬৯ সালে। এ থেকে কি বোঝা যায় না যে তিনিও এর মধ্যে ছিলেন এবং সংস্থার অনেকের নামধাম সমেত কাগজপত্র নিয়ে পালিয়ে এসে ঘাপটি মেরেছিলেন ইংলন্ডে? নিশ্চয় ওদেশের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির রাতের ঘুম ছুটে গেছে সেইদিন থেকে কাগজ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে তখন থেকেই।

আমরা যে-পাতাটা ছেঁড়া দেখলাম—

ডায়েরির পাতা। খুন আর হুমকির রেকর্ড। আজ আর কথা নয় ওয়াটসন। বেহালাটা দাও, এই জঘন্য আবহাওয়া আর তার চাইতে জঘন্য মানুষ জাতটাকে ভুলে-থাকা যাক।

সকাল বেলা আকাশ অনেকটা পরিষ্কার হল। সূর্য ম্লান মুখে উঁকি দিল কুয়াশা ছুঁড়ে। ঘুম থেকে উঠে দেখি প্রাতরাশ খাওয়ার টেবিলে আগেই হাজির হয়েছে হোমস।

আমাকে দেখেই বললে, ওহে, আজ থেকেই ওপেন-শ মামলার তদন্ত শুরু করব–এই লন্ডন শহরেই।

সেদিনকার সদ্য-আসা খবরের কাগজখানা তুলে নিয়ে বললাম, কীভাবে?

দেখি খোঁজখবর নিয়ে।

হঠাৎ চোখ পড়ল দৈনিকের একটা শিরোনামায়। রক্ত হিম হয়ে গেল আমার।

আঁতকে উঠে বললাম, হোমস—হোমস–বড্ড দেরি করে ফেললে!

তাই নাকি! হাতের কাপ টেবিলে নামিয়ে রাখে হোমস। কণ্ঠস্বর সংযত, কিন্তু মুখভাব দেখে বুঝলাম ভেতরে তার কী আলোড়ন শুরু হয়ে গেল।

কাল রাতে ওয়াটারলু ব্রিজে হঠাৎ একটা চিৎকারের সঙ্গেসঙ্গে ঝপাং করে একটা শব্দ শোনা যায়। কনস্টেবল দৌড়ে যায় জলের ধারে। লোক নামিয়েও তখন তাকে পাওয়া যায়নি। পরে জলপুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে। পকেটের মধ্যে একটা খাম ছিল। তা থেকেই জানা যায়, তার নাম জন ওপেন-শ। বাড়ি হর্সহ্যামের কাছে। পুলিশের বিশ্বাস, শেষ ট্রেন ধরার জন্যে ধড়ফড় করতে গিয়ে অন্ধকারে আর জল-ঝড়ে পথ হারিয়ে নদীর পাড়ে চলে যায়। সেখানেই পা ফসকে পড়ে গেল জলে। দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি।

চোখ তুলে শার্লক হোমসের মুখের চেহারা দেখে অবাক হয়ে গেলাম। কথা বলতে পারলাম না কিছুক্ষণ। এভাবে তাকে ভেঙে পড়তে কখনো দেখিনি আমি।

তারপর আর বসে থাকতে পারল না চেয়ারে। অস্থিরভাবে পায়চারি করতে লাগল ঘরময়। মুখ লাল, আঙুল অস্থির–ক্রমাগত হাত মুঠো করছে আর খুলছে।

আর বলছে, বাঁচবার জন্যে এসেছিল আমার কাছে–কিন্তু আমিই তাকে মৃত্যুর হাতে তুলে দিলাম। ধড়িবাজ শয়তানের দল! ব্রিজের ওপর লোক ছিল বলে ভুলিয়ে নিয়ে গেছে জলের ধারে নদীর পাড়ে–কিন্তু কীভাবে সেটা বুঝছি না! ঠিক আছে, দেখা যাক কে হারে কে জেতে!–চললাম ওয়াটসন।

কোথায়? পুলিশের কাছে?

পুলিশ! আমিই আমার পুলিশ।

সারাদিন ডাক্তারি নিয়ে কাটালাম। হোমস ফিরল রাত দশটা নাগাদ। চোখ-মুখ উদ্ৰান্ত, যেন একটা ঝোড়ো কাক। একটা শুকনো রুটি নিয়ে জলে ভিজিয়ে গিলতে লাগল কোঁৎকোঁৎ করে।

বলল, সকালে সেই যে খেয়েছি–পেটে আর কিছু পড়েনি। খাবার কথা মনেও ছিল না।

রহস্যের সমাধান হল?

অনেকটা হয়েছে। শয়তানগুলোকে কবজায় এনেছি, এবার হুমকি পাঠাব ওদেরই রীতিতে। ওপেন-শদের খুন করার বদলা এবার নেব।

বলতে বলতে একটা কমলালেবু নিয়ে খোসা ছাড়িয়ে ফেলল হোমস। কোয়ার মধ্যে থেকে পাঁচটা বিচি নিয়ে ভরল একটা খামে। ভেতরের ভাঁজে লিখল শা.হো. পাঠাচ্ছে জে.কা.কে।

খামের মুখ এঁটে ওপরে লিখল :

ক্যাপ্টেন জেমস কালহাউন, লোন-স্টার জাহাজ, স্যাভানা, জর্জিয়া।

শুকনো হেসে বলল, জাহাজঘাটায় এসেই পাবে এই চিঠি। ওপেনশ-দের মতো ওকেও ভয়ে উৎকণ্ঠায় অর্ধেক হয়ে যেতে হবে। শয়তান কোথাকার।

কালহাউন লোকটা কে, হোমস?

পালের গোদা, নাটের গুরু। চক্রান্ত এর স্যাঙাত্রাও করেছে, লজ্জায় আনব প্রত্যেককেই। পকেট থেকে এক তাড়া কাগজ বার করে দেখাল আমাকে। কাগজ ভরতি কেবল নাম আর তারিখ।

পুরানো ফাইল আর দলিল ঘেঁটে কাটিয়েছি সারাদিন। ১৮৮৩ সালের জানুয়ারি আর ফেব্রুয়ারিতে পন্ডিচেরিতে নোঙর ফেলেছিল অনেকগুলো পালের জাহাজ। তার মধ্যে একটা জাহাজের নাম যুক্তরাষ্ট্রের একটা রাষ্ট্রের নামানুসারে–লোন-স্টার।

তারপর?

ডান্ডিতে ১৮৮৫ সালের জানুয়ারিতেও এই লোন-স্টার নোঙর ফেলেছিল দেখে নিঃসন্দেহ হলাম। খোঁজ নিলাম লন্ডন বন্দরে। হ্যাঁ, এখানেও এসেছে লোন-স্টার। তৎক্ষণাৎ গেলাম জাহাজঘাটায়। শুনলাম সকালে রওনা হয়েছে স্যাভানার দিকে–মানে, দেশে ফিরছে।

অতএব!

টেলিগ্রাম পাঠিয়ে দিয়েছি স্যাভানায়–পুলিশ ওত পেতে থাকবে। কলের জাহাজে আমার এই চিঠিও ওদের পাল তোলা জাহাজের আগে পৌঁছে যাবে। ক্যাপ্টেন কালহাউন আর তার দুজন সহকারীই কেবল আমেরিকার লোক–বাদবাকি সবাই অন্য দেশের খালাসি। কাল রাতে এই তিনজন জাহাজে ছিল না–সে-খবর নিয়েছি! কাজেই ওপেন-শ-কে খুনের অপরাধে ত্রিমূর্তিকে গ্রেপ্তারের জন্যে পুলিশ তৈরি হয়েই থাকবে স্যাভানায়।

কিন্তু হায় রে কপাল। নিয়তির লিখন ছিল অন্যরকম। কুচক্রী কালহাউন কোনোদিনই জানতে পারেনি তার চাইতেও ধুরন্ধর এক ব্যক্তি ধরে ফেলেছে তার শয়তানি। পাঁচটা কমলাবিচি কোনোদিন তার হাতে পৌঁছোয়নি। সে-বছরের সেই দামাল ঝড় সমুদ্রের বুকে যে তাণ্ডব নাচ নেচেছিল, তার খপ্পর থেকে রেহাই পায়নি পালতোলা জাহাজ লোন-স্টার। বিধ্বস্ত একটা খোলকে ঢেউয়ের ডগায় ভাসতে দেখা গিয়েছিল কেবল–গায়ে লেখা ছিল–লোন-স্টার!

লেখক: আর্থার কোনান ডয়েল
অনুবাদ: অদ্রীশ বর্ধন

Anuprerona
Anupreronahttps://www.anuperona.com
Read your favourite literature free forever on our blogging platform.
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here


Most Popular

Recent Comments