সোমেন চন্দ রচনা সমগ্র

সোমেন চন্দ রচনা সমগ্র

সোমেন চন্দ (২৪ মে, ১৯২০— ৮ই মার্চ, ১৯৪২) একজন মার্কসবাদী আন্দোলনকারী সাহিত্যিক এবং ট্রেড ইউনিয়ন নেতা ছিলেন। সোমেন চন্দ ১৯২০ সালের ২৪ মে তারিখে জন্ম গ্রহণ করেন নরসিংদী জেলায়। ১৯৩৬ সালে তিনি…

সোমেন চন্দ রচনা সমগ্র

গান – সোমেন চন্দ

শীলাবতী যেন অপূর্ব সুন্দরী হইয়া উঠিয়াছে—বিশেষত আজিকার দিনটিতে। এক বছর ধরিয়া অশোক তাহাকে দেখিয়াছে, আজও দেখিল। দেখিল— শীলাবতী ঘামিয়া উঠিয়াছে, কপালে, সরু চিবুকে, গলার নীচে, বুকের মাঝটিতে ছোট ছোট ঘাম-বিন্দু। ডান হাতটি…


সোমেন চন্দ রচনা সমগ্র

শিশু তপন – সোমেন চন্দ

ছোটোবেলায় শুনিয়াছি—রূপকথার রাজপুত্র সোনার কাঠি স্পর্শ করাইয়া রাজকন্যার নিদ্রা ভাঙিয়া দেয়। বুড়া ঠাকুরমার মুখে ইহা শুনিয়া মনে হইত, নিছক একটি কাহিনি। কিন্তু বয়স হইবার সঙ্গে সঙ্গে সেই বিশাল জনহীন পুরীর মাঝে অনুপম…

সোমেন চন্দ রচনা সমগ্র

মহাপ্রয়াণ – সোমেন চন্দ

ছয়টা বাজিয়া গেল তবু কেউ আসিতেছে না। অথচ সাড়ে ছয়টায় মিটিং। উদ্যোক্তারা অধীর হইয়া উঠিল, শেষে স্থির করিল, এমন কান্ড তাহারা জীবনেও দেখে নাই, শোকসভার অনুষ্ঠান করিতে গিয়া যে এমন বেকুব বনিয়া…

সোমেন চন্দ রচনা সমগ্র

মরুভূমিতে মুক্তি – সোমেন চন্দ

আশ্চর্য, এমন একটা ছবি রানির ভালো লাগল না। অর্ধেকও হয়নি, তখনি সে অস্বস্তি বোধ করেছিল। আগে, পেছনে ও পাশের দর্শকগুলো তন্ময় হয়ে দেখছে, কিন্তু রাণি তার চোখ দুটি যদিও পর্দার দিকে রেখেছে,…

সোমেন চন্দ রচনা সমগ্র

সংকেত – সোমেন চন্দ

তখনও আকাশ ভালো করিয়া পরিষ্কার হয় নাই, নানারকমের পাখি আগামী দিনের ঘোষণায় প্রাণপণে ডাকাডাকি করিতেছে, বনগ্রামের মরা নদীর কঠিন বুকেও ভয়ানক ঝড় তুলিয়া কাহাদের এক লঞ্চ তীরে আসিয়া ভিড়িল। প্রথমে দেখিয়াছিল অন্ধ…

সোমেন চন্দ রচনা সমগ্র

রাত্রিশেষ – সোমেন চন্দ

লোকটিকে কী জানি কেন চিত্তর একটু ভালো লাগিয়াছে। রতন গোঁসাই-এর গায়ের বর্ণ শ্যাম, চামড়া মন হয় পালিশ করা সোনার চেয়েও মসৃণ, লম্বা, দেহ এবং ঈষৎ মোটা, মাথা ভরা একরাশ ঘাড় পর্যন্ত চুল,…

সোমেন চন্দ রচনা সমগ্র

প্রত্যাবর্তন – সোমেন চন্দ

দীর্ঘ পঁচিশটা বছর পরে। বিকালের রোদের নীচে সরু আলোর পথ দিয়া হাঁটিতে হাঁটিতে প্রশান্ত ভাবিল, দীর্ঘ পঁচিশটা বছর পরে আবার এই প্রথম সে গ্রামের দিকে পথ চলিতেছে। সেই পরিচিত পথ। সেই বুনোফুল-ঘাস-লতাপাতার…

সোমেন চন্দ রচনা সমগ্র

রানু ও স্যর বিজয়শঙ্কর – সোমেন চন্দ

সন্ধ্যা হয়ে গেছে অনেকক্ষণ, কিন্তু সান্ধ্যভ্রমণ শেষ হয়নি। পার্কের যেদিকটা জনবিরল সেখানে কখনো লাল কাঁকরের পথে, কখনো নরম ঘাসের উপরে স্যর বিজয়শঙ্কর নীরবে পায়চারি করছিলেন। অদূরে মানুষের ভীড় থেকে, যানবাহন পীড়িত পথের…

সোমেন চন্দ রচনা সমগ্র

দাঙ্গা – সোমেন চন্দ

লোকটি খুব তাড়াতাড়ি পল্টনের মাঠ পার হচ্ছিল। বোধহয় ভেবেছিল লেভেল ক্রসিংয়ের কাছ দিয়ে রেলওয়ে ইয়ার্ডে পড়ে নিরাপদে নাজিয়াবাজার চলে যাবে। তাহার হাতের কাছে বা কিছু দূরে একটা লোকও দেখা যায় না—সব শূন্য,…


সোমেন চন্দ রচনা সমগ্র

মরূদ্যান – সোমেন চন্দ

হাজরাদের বাড়ি বীণা বেড়াইতে গিয়াছে। পাড়ার অন্য দুই একটা বাসা খুঁজিয়া সেখানে রণু গিয়া তাহাকে পাইল। বীণা আরও কয়েকজন মেয়ে ও বধূর সঙ্গে বসিয়া গল্প করিতেছিল। রণু ঘরের বাহিরে দাঁড়িয়া ডাক দিল,…

সোমেন চন্দ রচনা সমগ্র

প্রান্তর – সোমেন চন্দ

রক্ষিতরা সম্পন্ন, অর্থে এবং পরিবার সভ্য সংখ্যাতেও। রান্নাঘরে উনান রেহাই পায় না,—শিশুদের কলরবে দেয়াল রেহাই পায় না। প্রতিধ্বনি করিয়া ক্লান্তি আসে। যেন একটি ছোটো কারখানা। এ বাড়ির গুঞ্জনের সঙ্গে ভোরবেলা যেকোনো লোকের…