Friday, March 29, 2024
Homeঅবাক বিশ্বমিশরের পিরামিডের অজানা রহস্য ও ইতিহাস

মিশরের পিরামিডের অজানা রহস্য ও ইতিহাস

পিরামিডের রহস্য ও ইতিহাস

মিশরের পিরামিড রহস্য ও ইতিহাস প্রায় ৪,৫০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন। মিশরের পিরামিড কিভাবে তৈরি হয়েছে ? ইজিপ্টের ইতিহাস ঘেঁটে দেখলে যে সমস্ত তথ্য সামনে আসে। তা থেকে এটাই বলা যায়, মিশরের রহস্যময় পিরামিড হল অজস্র রহস্যয় ভরা। তাই গুনীজনেরা মিশরের পিরামিড রহস্য এবং মিশরের পিরামিডের নির্মাণ কার্য ও কৌশল, বিশ্লেষণ করে পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের বস্তুর তালিকার মধ্যে,অন্যতম বলে মনে করেন। পৃথিবীর আরো ভিন্ন দেশে নানা জায়গায় পিরামিড ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

কিন্তু মিশরের গিজা শহরের পাশে নীল নদীর তটদেশে অবস্থিত, গিজার পিরামিড,পৃথিবীর অন্যান্য পিরামিডের থেকে রহস্য রোমাঞ্চের নিরিখে, মিশরের পিরামিড রহস্যর চাদরে মোড়া বলে মনে করা হয়।

আসুন আমরা সবাই মিলে মিশরের পিরামিড রহস্য, মিশরের পিরামিডের ইতিহাস ও পিরামিডের কাহিনী নিয়ে একটু খানি জানার চেষ্টা করি।

পিরামিড তৈরির ইতিহাস

মিশরের রহস্যময় পিরামিডের নির্মাণ ও পিরামিডের ইতিহাস নিয়ে বহু কাহিনী ও কথা প্রচলিত আছে। আগেকার দিনে প্রাচীন মিশরের লোকেরা, মানুষকে কবরস্থ করার জন্য মৃত দেহকে মমিতে পরিণত করত। মৃতদেহকে মমি করার পর,রাখা হত ত্রিভুজাকৃতি মকবরা তৈরি করে। মিশরীয় ভাষায় এই মকবরা হল পিরামিড (Pyramid)।

আসুন নিচের পঙতিতে মিশরের পিরামিড কেন তৈরি করা হয়েছিল সেই বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে জানার চেষ্টা করি।

পিরামিডের রহস্য ও ইতিহাস

মিশরের পিরামিডের রহস্য নিয়ে মানুষের মনে রহস্যের শেষ নেই। পিরামিড কেন তৈরি করা হয়েছিল? সেই কারণের দিকে আলোকপাত করলে দেখতে পাওয়া যায়, প্রাচীনকালে মিশরের লোকেরা মিশরের রাজা, মানে যাকে আমরা ফ্যারাও বলেই বেশি চিনি। যাইহোক এই ফ্যারাও এর মধ্যে কারোও মৃত্যু হলে, মিশরের লোকেরা ফ্যারাওকে কবরস্থ করার আগে তার মৃত শরীরকে পচনের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য,ফ্যারাও এর মৃতদেহকে মমিতে পরিণত করতো।

এই মমি করার পক্রিয়া ০২টি মুখ্য কৌশলে করা হত-০১.অভ্যন্তরীন মমি ক্রিয়া,০২.বাহ্যিক মমি ক্রিয়া। অভন্তরীন মমিক্রিয়ার জন্য, সর্বপ্রথম মৃত ব্যক্তির নাড়ি,ভুঁড়ি সহ বিভিন্ন অঙ্গ, যেমন-কিডনি,ব্রেন,লিভার,যকৃৎ ইত্যাদি মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলি বার করে নেওয়া হত। মানবদেহের অভ্যন্তরীন অঙ্গ বলতে শুধু হৃদ যন্ত্র বা হৃৎপিন্ড কে শরীরের ভিতরে রেখে দেওয়া হত।

মিশরীয় লোকেদের বিশ্বাস ছিল,মানুষের হৃৎপিণ্ডে মানে হৃদয়ে মানুষের আত্মার বাসস্থান। তাই তারা মৃতদেহের মধ্যে হৃৎপিন্ডটিকে অক্ষত রেখে, মৃত শরীরে বিশেষ পচন রোধক মসলা মাখিয়ে মমি করে রাখত।

অভন্তরীন মমি করার পক্রিয়া শেষ হলে,শুরু হতো বাহ্যিক মমি করার পক্রিয়া। মৃতদেহে বাহ্যিক মমি করণের প্রক্রিয়ায়, মৃতদেহের বাহ্যিক শরীরে মসলা মাখানোর পর, পুরো মৃতদেহকে লম্বায় ১.৫কিমি কাছাকাছি পুরো ব্যান্ডেজ দিয়ে মৃত দেহকে জড়িয়ে বেঁধে ফেলা হত। এরপর ব্যান্ডেজ বাঁধার প্রক্রিয়া শেষ হলে, মৃতদেহকে লাইলেন নামের একপ্রকার দড়ি দিয়ে পুরো মমিকে শক্ত বাঁধনে বেঁধে ফেলা হতো। মৃতদেহ ভালোভাবে বাঁধা হয়ে গেলে, মমি করা মৃতদেহকে বড়ো মকবরার মধ্যে রাখা হত,ফ্যারাও এর পুনঃ জন্ম প্রাপ্তির আসায়। মকবরা হল আসলে পিরামিড (Pyramid), যাকে চলতি ভাষায় অনেকে মকবরা বলে থাকেন।

মিশরের পিরামিড রহস্য

মিশর ছাড়াও আরো অন্যান্য দেশে পিরামিডের সন্ধান পাওয়া গেছে। শুধুমাত্র মিশরের মধ্যে ১৩৮ এর কাছাকাছি পিরামিড পাওয়া গেছে।

কিন্তু সেই সমস্ত পিরামিড এতটা বিখ্যাত কিংবা জনপ্রিয়তা পায়নি,যতটা মিশরের,মানে ইজিপ্টের গিজা শহরের পিরামিড পেয়েছে।

ইজিপ্টের এই পিরামিড বিখ্যাত ও মিশরের পিরামিড রহস্যময় হওয়ার পিছনে অনেক কারণ খুঁজে পাওয়া যায়। আসুন তাহলে মিশরের পিরামিড রহস্যময় হওয়ার কারণ গুলি জেনে নেওয়া যাক –

পিরামিডের রহস্য ও ইতিহাস

০১. ইজিপ্টের গিজা শহরে অবস্থিত ০৩ টি পিরামিড হল বিশ্বের সবথেকে প্রাচীন এবং আকার ও আয়তনে বড়। যার জন্য মিশরের পিরামিডকে পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের তালিকায় শীর্ষে রাখা হয়েছে।

০২. ইজিপ্টের গিজা শহরে অবস্থিত ৪৮১ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট মিশরের রহস্যময় পিরামিডকে,সবাই খুফুর পিরামিড বলে জানে। বলা হয় ফ্যারাও খুফু মারা যাওয়ার আগে, খুফুর বাবা খাফর ফ্যারাও এর পিরামিডের পাশে খুফু তার পিরামিড তৈরি করে,সমাধিস্থ করার আদেশ দিয়েছিলেন। পরে রাজা খুফুর মৃত্যু হলে তার বাবার খাফর এর পিরামিডের পাশে খুফুর পিরামিড নির্মাণ করা হয়।

০৩. খুফুর পিরামিডের পাশে,কিছুটা দূরেই রয়েছে এক বিশালকার পশুর শরীর বিশিষ্ট,মানব মুন্ড যুক্ত বিশালাকার এক মূর্তি। এই মূর্তিটিকে Sphinx বলা হয়।

০৪. Sphinx কে রাজা খাফর এর মূর্তির অংশ হিসাবে ধরা হয়ে থাকে। Sphinx মূর্তিটির ডিজাইন এমনভাবে করা হয়েছে, যে দূর থেকে পর্যটকদের মনে হয়, Sphinx হল রাজা খাফর পিরামিডের অত্যন্ত সজাগ প্রহরী। যে সর্বদা ফ্যারও খাফর এর পিরামিডকে পাহারা দিয়ে শত্রু পক্ষের নজর থেকে আগলে রাখছে।

০৫. বিশেষজ্ঞ গবেষকদের মতানুযায়ী Sphinx এর মানুষের মুন্ডের যে চেহেরার মধ্যে দিয়ে,ফ্যারও খাফর এর চেহেরাকে তুলে ধরা হয়েছে।

০৬. গিজার তৃতীয় পিরামিডটি আর ০২ টি পিরামিড থেকে আকারে ছোট। এই ছোটো পিরামিডটাকে মেনকায়ার এর পিরামিড বলা হয়ে থাকে। প্রত্নবিদদের মতে মেনকায়ার হল রাজা খাফর এর উত্তরাধিকারী।

০৭. ইজিপ্ট এর গিজা শহরে অবস্থিত পিরামিড হল মানব দ্বারা নির্মিত পৃথিবীর প্রথম আশ্চর্যতম জিনিস। মিশরের পিরামিড পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের তালিকায় সবথেকে পুরোনো ইতিহাসের স্বাক্ষী বহন করে চলেছে।

০৮. কালের প্রহরে সময়ের সাথে,সাথে সবকিছু বিলীন হয়ে গেলেও একমাত্র মিশরের পিরামিড,সমস্ত রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝড়,বৃষ্টি,ভূমিকম্পের হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে, মিশরের পিরামিড রহস্য নিয়ে তার প্রাচীনতার প্রমান দিচ্ছে। কালের নিয়মে মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ধ্বংস হয়ে গেলেও মিশরের রহস্যময় পিরামিড একই জায়গায়,পাহাড়ের ন্যায় মৃত্যুঞ্জয় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আজও।

মিশরের পিরামিড নিয়ে গবেষকরা যা বলেন

মিশরের পিরামিডের এই রহস্য ঘিরে প্রত্নতত্ববিদরা নানা গবেষণা চালিয়েছেন। মিশরের পিরামিডের রহস্য ও পিরামিডের ইতিহাস, আজও আধুনিক বিশ্বকে অবাক করে দেয়। আজ থেকে প্রায় ৪,৫০০ বছর আগে,কোনোরকম টেকনোলোজী ছাড়াই গিজার ৪৮১ ফুট উঁচু পিরামিড শুধু মাত্র মানব দ্বারা নির্মাণ করা হয়েছিল।

মিশরের পিরামিড কিভাবে তৈরি হয়েছে,তার আশ্চর্য নমুনা পাওয়া যায় পিরামিডের নির্মাণ কৌশল লক্ষ করলে। আপনারা একটু ঠান্ডা মস্তিষ্কে ভেবে দেখলেই তা বুঝতে পারবেন।

পিরামিডের রহস্য ও ইতিহাস

আজথেকে প্রায় কয়েকশো যুগ আগে,বিজ্ঞান যখন তার দাড় গৌড়াতে পৌঁছায়নি। তখন মাটি থেকে ৪৮১ ফুট উচ্চতায় কোনো টেকনোলজী ছাড়াই এতো ভারী,ভারী সব পাথর তুলে নিয়ে গিয়ে, পর,পর এক শ্রেণী বদ্ধ ভাবে সাজিয়ে এতো বড়ো স্বারক তৈরি করা নিহাত মিরাক্কেল ছাড়া আর কি বলবেন। তাইতো আজও যুগের ও কালের মারকে নীরবে সহ্য করে, মিশরের পিরামিড রহস্য নিয়ে,তার নিজের জায়গায় একই ভাবে নীরবে দাঁড়িয়ে আছে। আজও তাই মিশরের পিরামিডের রহস্য,দেশ বিদেশের নামি বিজ্ঞানের সাধক,বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দেয়।

আজথেকে প্রায় ৪,৫০০ বছর আগে যখন মানুষ চাকার ব্যবহার জানত না,ছিলনা তখন কোনো জেসিবি কিংবা ক্রেনের মত আধুনিক নির্মাণ সহযোগী জিনিস, অথচ ৪৮১ ফুট উচ্চতায় বড়ো,ভারী পাথরের ব্লক গুলোকে,বয়ে নিয়ে গিয়ে,পিরামিডের নির্মাণ করা হয়েছিল। সাধারণ মানুষের পক্ষে,আপাদৃষ্টিতে এই কাজ করা প্রায় অসম্ভব।

আপনারা এই পাথর গুলোর ওজন জেনে হয়ত অবাক হবেন। কিন্তু হতবাক হওয়ার মত কিছু নয়,মিশরের রহস্যময় পিরামিড নির্মাণ করতে যে চুনা পাথরের তৈরি ব্লক গুলি ব্যবহার করা হয়েছিল,তার এক একটা ব্লকের ওজন ছিল প্রায় ২,৭০০ কেজি থেকে ৭০,০০০ কেজি। আপনারা হয়ত বলতেই পারেন সেযুগে ক্রেনের মতো কোনো আধুনিক লিভার যন্ত্র বিশেষ কিছু ছিল,যা দিয়ে এতো বড় পাথরের ব্লক গুলোকে পিরামিডের নির্মাণ কার্যের জন্য উপরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

কিন্তু আপনাদের জেনে রাখা ভালো আধুনিক অট্টলিকা ও আরো বিভিন্ন নির্মাণ কার্যে ব্যবহৃত ক্রেন গুলি শুধুমাত্র ২০,০০০ কেজি পর্যন্ত ভার ওঠাতে সক্ষম।

কিন্তু তখনকার দিনে আজ থেকে প্রায় কয়েকশো বছর আগে শুধু মাত্র মানুষের দ্বারা এত ভারী,ভারী পাথরের ব্লক গুলি দিয়ে মিশরের পিরামিড কিভাবে তৈরি হয়েছে ভাবতে অবাক লাগে।

মিশরের পিরামিড কেন তৈরি করা হয়েছিল আজও তা বিস্ময়,মিশরের পিরামিড নির্মাণ কার্যে ২৩ লক্ষ পাথরের ব্লক ব্যবহার করা হয়েছিল, আর এই ভারী পাথর গুলি কোথা থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল, এর কোনো জবাব নেই। এর জবাব মিশরের পিরামিডের রহস্যর অন্ধকারে আজও স্তব্ধ হয়েই রয়ে গেছে।

তখনকারদিনে মেসোপটেমিয়া সভ্যতায় লোহার মতো শক্ত ধাতুর ব্যবহার মানুষ জানতো না। মানুষ ধাতু বলতে শুধু তামার ব্যবহার করতো।

অথচ মিশরের পিরামিডের কাহিনীতে আজও আবছা ,কিভাবে ইজিপ্টের লোকেরা এই বড়ো বড়ো ভারী পাথর গুলোকে কেটে,নিখুঁত ভাবে চার কোন সেফ দিল।

এই প্রশ্ন মিশরের পিরামিডের রহস্যকে আরো রহস্যময় করে তোলে। কারণ শুধু মাত্র তামার দ্বারা তৈরি উপকরণ ব্যবহার করে পাথর কেটে পাথরের চার কোনা সেফ দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ তামা হল একটি নরম ধাতু,যা দিয়ে কঠিন পাথর কাটা প্রায় অসম্ভব বললেই চলে।

মিশরের পিরামিডের ইতিহাস একটু সুষ্ঠ মস্তিষ্কে অধ্যয়ন করলে আমরা দেখতে পায় আজ থেকে ৪,৫০০ বছর আগে বিনা কোনো মেশিনারিতে, শুধু মাত্র মানুষের কঠিন পরিশ্রম ও শিল্প কর্ম দ্বারা পিরামিডের মত বড় স্মারক নির্মাণ কার্য,আজও মিশরের পিরামিডের রহস্য হয়ে রয়েই গেছে।

তাহলে কি আমরা মিশরের পিরামিডের ইতিহাস দেখে অনুমান করে নিতেই পারি,আমাদের পূর্ব পুরুষদের কাছে এমন কোনো আধুনিক ও অতি উন্নত প্রযুক্তিগত কলাকৌশল জানা ছিল, যা আমাদের আধুনিক প্রজন্মের চিন্তার বাইরে। না পিরামিড নির্মাণ ও মিশরের পিরামিড রহস্যর পিছনে কোনো ভিন্ন গ্রহের প্রাণীর যোগদান আছে।

মিশরের পিরামিডের রহস্যের মধ্যে একটা ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়,যাকে Orion Correlation Theory বলা হয়ে থাকে।

যদি কখনো আপনারা ইজিপ্ট গিয়ে থাকেন,তাহলে রাত্রি বেলা গিজা শহর থেকে অনতিদূরে অবস্থিত ফ্যারাও খুফুর পিরামিড দেখলে দেখতে পাবেন, পিরামিড তিনটির উপরে একই সরল রেখায় অবস্থিত,০৩ টি তারার সমন্বয়ে একটি তারা মণ্ডলকে দেখতে পাওয়া যায়। পিরামিডের উপর অবস্থিত এই ০৩ টি তারার অবস্থান, আপনি পিরামিডকে যে দিক থেকেই দেখুন না কেন,এই তারা ০৩ টিকে সর্বদা একই সরল রেখায় দেখতে পাবেন। তারা গুলোকে দেখে মনে হবে,তারা গুলোর এক একটি পিরামিডের চূড়ার উপর মনির মতো জ্বলছে।

এই তারা মণ্ডলের নাম হল Orion Belt তারা মণ্ডল। এই তিনটি তারার নাম হল- Anitak, Ainilam, Mirtka. এই তিনটি তারাকে সর্বদা মিশরের পিরামিডের উপর ৯০ ডিগ্রি কোনে দেখতে পাওয়া যায়।

ইজিপ্টের ইতিহাস ও মিশরের পিরামিডের এই সব রহস্য দেখে বিশেষজ্ঞদের এক অংশের ধারণা,আমাদের ধরা ধামে ভিন্ন গ্রহের লোকেরা অনেক আগে এসেছিল।

এলিয়নরা যখন পৃথিবীতে আসে,তখন তারা তাদের সঙ্গে তাদের উন্নত প্রযুক্তি ও কলাকৌশল সঙ্গে করে নিয়ে এসেছিল এবং মিশরের রহস্যময় পিরামিড নির্মাণে এলিয়েনদের যোগদান ছিল।

আবার কারো কারো মতে এলিয়েনরা পৃথিবীতে এসেছিল ফ্যারও খুফুর পিরামিডের উপরে রাত্রি বেলা অবস্থান করা ঐ ০৩ টি নক্ষত্রের সমন্বয়ে গঠিত Orion Belt নক্ষত্র মন্ডল থেকে।

পিরামিড কিভাবে তৈরি হয়েছিল ? পিরামিড মানুষ দ্বারা নির্মাণ করা হয়েছিল না এলিয়েনরা তৈরি করেছিল ? সঠিকভাবে কেউ বলতে পারেনা। তবে মিশরের পিরামিডের কাহিনীতে, Orion Belt নক্ষত্র মণ্ডলের সংযোগ একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায়না। কিছু বিশেষজ্ঞদের মতে এলিয়নেরা পিরামিডের উপর অবস্থান করা ঐ ০৩ টি তারা থেকে এসেছিল।

পিরামিড কেন তৈরি করা হয়েছিল ? এর উত্তরে বিশেষজ্ঞদের মতামত হল,পিরামিডের নির্মাণ করা হয়েছিল ভিন্ন গ্রহের লোকেদের সাথে সংযোগ রক্ষা করার জন্য।

পিরামিড হল ভিন্ন গ্রহের প্রাণীদের সাথে কমিউনিকেশন টাওয়ার। আর এই জন্য রাত্রি বেলা ঐ ০৩ টি তারার সাথে একই সরল রেখায় নিখুঁত ভাবে ফ্যারও খুফুর পিরামিডের উপর সোজাসোজি সংযোগ ঘটে থাকে।

পিরামিডের ভিতরের ছবি ও ইতিহাস

মিশরের পিরামিডের প্রতিটি কোনে নানা রহস্য লুকিয়ে আছে। কিন্তু মিশরের পিরামিডের ভিতরের ছবিতে ধরা পড়া সুড়ঙ্গ পথ,মিশরের পিরামিড রহস্যকে আরো রহস্য চৌকিত করে তোলে।

পিরামিডের মধ্যে বেশ কয়েকটি জায়গায় সুড়ঙ্গ পথ আছে,এই সুড়ঙ্গ পথকে এতদিন মানুষ পিরামিডের ভিতরে বায়ু চলাচলের জন্য রাখা হয়েছে বলে মনে করত।

pyramid 3

কিন্তু মানুষের মনে পিরামিডের সুড়ঙ্গ পথ নিয়ে এই ধারণা কিন্তু সম্পূর্ণ ভুল। মিশরের পিরামিডের ভিতরের ছবিতে তিনটি বেস চেম্বারের কথা বলা হয়েছে।

এই তিনটি চেম্বার হল- ০১. বেস চেম্বার, ০২. কুইন চেম্বার, ০৩. কিং চেম্বার। আর সবথেকে মজার ব্যাপার এই তিনটি চেম্বার, সুড়ঙ্গপথ দিয়ে, একে অপরের সাথে যুক্ত রয়েছে।

তাই খুব সহজেই এক পথ দিয়ে আর এক চেম্বারে যাওয়া যায়। মিশরের পিরামিডের রহস্যের মধ্যে অন্যতম রহস্য এটা যে মিশরের পিরামিডের ভিতরে থাকা, ০৩ টি চেম্বারের কোনোটিতেই কোনো ফ্যারাওয়ের,কোনো প্রকারের কোনো মমি কিংবা অন্য বস্তু সামগ্রী পাওয়া যায়নি। রসহস্যময় পিরামিডের ভিতর ফাঁকা ছিল।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা এখনো মিশরের পিরামিডের ভিতরে আরো অনেক সুড়ঙ্গ পথ ও চেম্বার রয়েছে,যেগুলো এখনো আবিষ্কৃত হয়নি।

ইজিপ্টের মানুষের কাছে মিশরের পিরামিডের কাহিনী নিয়ে অনেক গল্প শোনা যায়,ইজিপ্টের মানুষের ধারণা ছিল ইজিপ্টের রাজা অথ্যাৎ ফ্যারাও এর মমি পিরামিডের (Pyramid) চেম্বারের, ভিতরে রাখা হলে ফ্যারাও এর আত্মা,আকাশের উপরে থাকা ঐ তিনটি তারার দিকে যাবে। ইজিপ্টের পিরামিডের ইতিহাসে এই ঘটনাকে Star Shaft Theory বলা হয়।

একবার এক ফরেনসিক টিম আসে,মিশরের পিরামিডের ভিতরের ছবি দেখে,পিরামিডের ভিতরের রহস্য উন্মোচন করার জন্য।

ফরেনসিক টিম পিরামিডের ভিতরের সুড়ঙ্গের রাস্তা ধরে,একটি রোবটিক ক্যামেরা সুড়ঙ্গের ভিতরে পাঠায়। রোবর্ট ক্যামেরাটি যখন সুড়ঙ্গের শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছায়, তখন ক্যামেরার মনিটর স্ক্রিনে দেখতে পাওয়া যায় যে,সুড়ঙ্গের রাস্তা এক জায়গায় গিয়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ঐ রাস্তাটি একটি পাথরের দরজা দিয়ে বন্ধ করা আছে।

মিশরের পিরামিডের কাহিনী অনুযায়ী যদি সুড়ঙ্গ পথের নির্মাণ,শুধুমাত্র বায়ু চলাচলের জন্য করা হত,তাহলে সুড়ঙ্গপথ আগে গিয়ে বন্ধ করা থাকত না।

এর থেকে আমরা একটা পরিষ্কার ধারণা নিতেই পারি যে,ইজিপ্টের লোকেরা জেনে বুঝেই সুড়ঙ্গ পথের মাঝখানে পাথরের দরজা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে,যাতে এর আগে কেউ পৌঁছাতে না পারে।

এই ঘটনার আরো কিছুদিন পর, কুইন চেম্বারের ভিতরে দরজার অপর প্রান্তে রহস্যময় পিরামিডের রহস্য উন্মোচণ করার চেষ্টা করা হয়।

এবারে ফরেনসিক দল ড্রিল মেশিন দিয়ে,কুইন চেম্বারের দেওয়ালে ফুটো করে মিসরের পিরামিডের ভিতরের ছবি দেখার চেষ্টা করে।

এই সুক্ষ ছিদ্রের ভিতর দিয়ে মাইক্রো ক্যমেরা, কুইন চেম্বারের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু ক্যামেরাটি দেওয়ালের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে পৌঁছাতে না পৌঁছাতে খারাপ হয়ে যায়।

এই ঘটনার পর থেকে ইজিপ্ট সরকার পুরোপুরি ভাবে,ইজিপ্টের পিরামিডের উপর প্রত্নতাত্বিক অনুসন্ধানের অনুমতি দেওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।

তবে ক্যামেরার খারাপ হয়ে যাওয়া মানেই কুইন্স চেম্বারের পিছনে থাকা অন্য কোনো প্রকোষ্ঠ থাকার সম্ভবনাকে নিত্যান্ত হালকা ভাবে নেওয়া চলেনা।

তবে এই ঘটনা থেকে,এই সমন্ধে আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে,মিশরের পিরামিড শুধু মমি রাখার জন্য নির্মাণ করা হয়নি। রহস্যময় পিরামিডের পিছনে,আরো অন্য কোন রহস্য লুকিয়ে আছে।

ইজিপ্টের পিরামিডের এই সব রোমহর্ষক ঘটনা,অধিকাংশ গবেষকের মনে পিরামিড নির্মাণের পিছনে এলিয়েনের অবদানের প্রশ্নকে নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে।

গবেষকদের মতে ইজিপ্টের পিরামিডের নির্মাণ শুধু মমি রাখার জন্য করা হয়নি, পিরামিডের নির্মাণ করা হয়েছিল বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য। আর ইজিপ্টের এই পিরামিড ছিল সেই যুগের পাওয়ার প্লান্ট।

মিশরের পিরামিডের অজানা রহস্য

পাঠকগণ আপনারা জানলে অবাক হবেন মিশরের পিরামিডের অজানা রহস্যের মধ্যে একটা হল,বর্তমানে যেখানে গিজা শহরের কাছে ইজিপ্টের পিরামিড রয়েছে, সেই জায়গা হল আমাদের পৃথিবীর মধ্যস্থল বা মূল কেন্দ্র বিন্দু। আর এটা আমার নিজের কোনো মন গড়া গল্প নয়। যদি পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিম এবং উত্তর ও দক্ষিণে দুটি সরল রেখা দিয়ে যোগ করা হয়,তাহলে দেখতে পাওয়া যায় রেখা দুটি একে অপরকে পরস্পরে গিজার পিরামিডের উপর সমানে ক্রস করছে। আর ঐ ক্রস করা জায়গাটি পৃথিবীর কেন্দ্র বিন্দুকে নির্দেশ করছে।

পিরামিডের রহস্য ও ইতিহাস

আপনারা আরো জানলে অবাক হবেন যে,ফ্যারও খুফুর পিরামিডের (Pyramid) সেন্টার পয়েন্ট থেকে সরল রেখা টানলে,সেই সরল রেখা সোজা নর্থ পোলে গিয়ে মিশে যাচ্ছে।

তাহলে ভেবে দেখুন,আধুনিক জ্যামিতির জনক হিসাবে আমরা পিথাগোরাসকে জানি। কিন্তু পিথাগোরাসের জন্ম হওয়ার কত বছর আগে,যখন মানুষ জ্যামিতি কি জিনিস জানতনা, অথচ সেই সময় ইজিপ্টের লোকেরা বিনা দিকদর্শন যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে,এতটা নিখুঁতভাবে পিরামিডকে পৃথিবীর কেন্দ্র বিন্দুতে স্থাপন করেছিল।

রহস্যময় পিরামিডের নানা ধরণের সব অলৌকিক ঘটনা ও মিশরের পিরামিডের অজানা রহস্যগুলি,আধুনিক বিজ্ঞানকেও প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দেয়।

মিশরের লোকেদের পৃথিবীর কেন্দ্র বিন্দুতে,মিশরের রহস্যময় পিরামিডের নির্মাণ সত্য অলৌকিক ব্যাপার। তখনকার মানুষ পৃথিবীর আকৃতিকে নিত্যান্ত চওড়া বলেই জানত।

পৃথিবীর আকৃতি যে গোলাকার,এরকম কোনো ধারণা মানুষের মনে ছিলনা। অথচ বিনা কোনো গাণিতিক ও জ্যামিতির জ্ঞান ছাড়াই, ইজিপ্টের লোকেরা পৃথিবীর কেন্দ্র বিন্দুকে খুঁজে বার করতে সমর্থ হয়েছিল।

একই সঙ্গে মিশরের পিরামিডের রহস্যময়তা,নিত্যান্ত কাকতালীয় বলে চালিয়ে দেওয়া যায়না। এই সমস্ত ঘটনাগুলি তাই আরো

একবার,মিশরের রহস্যময় পিরামিড নির্মাণে মানুষের সাথে ভিন্ন গ্রহের প্রাণীদের যোদানের দিকে ক্রমশ ইশারা করে যায়।

তখনকার দিনে কোনো রকম ড্রোন ক্যামেরা,হেলিকপ্টার এর মতো কোনো আধুনিক যন্ত্র ছিলনা যে ওপর থেকে সঠিক aliment নির্ণয় করে নির্মাণ কাজ শুরু করবে।

পিরামিড নির্মাণে, একেবারে নিখুঁত ও সঠিক aliment শুধু মাত্র অন্য গ্রহের প্রাণীরাই দিতে পারত। এলিয়েনরা তাদের স্পেস শিপ থেকে পৃথিবীর কেন্দ্র বিন্দু aliment নির্ণয় করার দক্ষতা রাখতো।

ইজিপ্টের পিরামিড নির্মাণে যে সমস্ত পাথর গুলি ব্যবহার করা হয়েছিল,সেগুলোকে দেখে লাইম স্টোন মনে হলেও, সেগুলি কিন্তু আসলে লাইম স্টোন নয়।

এই পাথরগুলি কোথা থেকে নিয়ে আসা হয়েছিল এই নিয়েও গবেষকদের মনে নানা প্রশ্ন আছে। ইজিপ্টের পিরামিড নির্মাণে ব্যবহৃত পাথরের কিউব গুলি হল খুব ভারী এবং মজবুত।

প্রত্নতাত্ত্বিকরা মিশরের রহস্যময় পিরামিডে ব্যবহৃত পাথরের কিউব গুলি সমন্ধে,পাথরের গুণাবলী ও কি উপাদানে পাথর গুলি তৈরি হয়েছে,সেই নিয়ে কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারেনি।

আর সচরাচর মিশরের রহস্যময় পিরামিডের নির্মাণ কার্য ছাড়া,এরকম ধরণের পাথর পৃথিবীর অনত্র কোথাও চোখে পড়ে না।

ফ্যারাও খুফুর পিরামিড তৈরির জন্য Ball & Socket technic ব্যবহার করা হয়েছিল। Ball & Socket technic ব্যবহার করে মিশরের পিরামিডকে ভূকম্প থেকে সুরক্ষিত করে গড়া হয়েছিল।

ইজিপ্টের ইতিহাসে এরকম বিরল দৃষ্টান্ত আর অন্য কোথাও চোখে না পড়লেও,শুধু মাত্র ইজিপ্টের পিরামিড নির্মাণে Ball & Socket technic ব্যবহার করা হয়েছিল।

Ball & Socket technic দিয়ে একটি পাথরের সাথে আর একটি পাথরের মাঝখানে গ্যাপ রেখে,এমনভাবে দুটি পাথরকে জোড়া লাগানো হয়, যে প্রখর রোদ্রে তেতে পাথরের কিউব গুলি গরম হয়ে আয়তনে বড়ো হয়ে গেলেও,পিরামিডের দেওয়াল ফেটে যাওয়ার কোনো ভয় থাকবেনা।

আজ থেকে ৪,৫০০ বছর আগে মিশরের পিরামিডের ইতিহাসে, পিরামিডের মধ্যে প্রাকৃতিক এয়ার কন্ডিশনারের প্রয়োগ করেছিল মিশরের লোকেরা।

ইজিপ্টের জলবায়ু চরমভাবাপন্ন, তাই ইজিপ্টে সর্বদা ৫০ ডিগ্রির কাছাকাছি তাপমাত্রা থাকে। এই চরম তাপমাত্রার থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মিশরের পিরামিডের ভিতরে, এমন এক প্রাকৃতিক শীত ও তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা করা হয়েছিল যে,গরমকালে ইজিপ্টের বাইরের তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি ছুঁয়ে গেলেও পিরামিডের ভিতরের তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি থাকত।

ইজিপ্টের টুরিস্ট প্লেসের প্রায় প্রতি জায়গায়,বিভিন্ন প্রাচীন মন্দির ও স্থাপত্যের দেওয়ালে,স্পেস শিপ এবং বড়ো মাথা,ছোট চোখ ও আকারে ছোট আধুনিক এলিয়নের ন্যায় ছবি দেখতে পাওয়া যায়।

ইজিপ্টের স্থাপত্য শিল্প নিদর্শনে এতো বেশি এলিয়নের ছবি খোদায় থাকার জন্য মনে করা হয়,পিরামিড আসলে এলিয়নের দ্বারা বানানো স্থাপত্য কর্ম।

পৃথিবীতে প্রতি বছর জুন মাসের ২১ তারিখ সবথেকে বড়ো দিন এবং সবথেকে ছোট রাত হয়। কিন্তু আপনারা যদি ঐ ২১ জুন ইজিপ্টের পিরামিডের সূর্যাস্ত দেখেন, তাহলে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখতে পাবেন। ঐ দিন গিজার পিরামিডে সূর্যাস্ত দেখলে দেখতে পাবেন, সূর্য Sphinx এর মাথার উপর দিয়ে অস্ত যাচ্ছে, পিরামিডের এই সমস্ত অলীক ঘটনা, মিশরের পিরামিডের রহস্যকে রোমহর্ষক করে তোলে এবং গিজার পিরামিডকে বাকি আরো অন্যান্য পিরামিড থেকে আলাদা করে দেয়।

ইজিপ্টে ড্যান্ডেরা নামে একটি জায়গা আছে। সেখানে একটি বহু পুরাতন মন্দির আছে, এই মন্দিরের প্রাচীন নাম হল ড্যান্ডেরা লাইট কমপ্লেক্স।

তখনকারদিনে ইজিপ্টের লোকেরা এই মন্দিরটি তাদের ভগবান হেটোর জন্য বানিয়েছিল। মিশরের এই মন্দিরটি হল মিশরের অন্যান্য আরোও রসহস্যময় জায়গার মধ্যে অন্যতম একটি।

ইজিপ্টের ইতিহাসের পাতা উল্টে দেখতে পাওয়া যায়,ড্যান্ডেরা লাইট কমপ্লেক্সের বেশিরভাগ অংশ বালিতে ঢাকা পড়েছিল। ১৮০০ সালে ইজিপ্টের সরকার,প্রত্নতত্ব বিভাগের চেষ্টায় মন্দির চত্বর থেকে বালি সরিয়ে দেয়।

মন্দির চত্বর থেকে বালির স্তর হটিয়ে দিলে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের হাতে এক নতুন জিনিস হাত লাগে। গবেষকরা ড্যান্ডেরা লাইট কমপ্লেক্সের দেওয়ালে, মানব সহ আধুনিক ইলেকট্রিক বাল্বের একটি খোদায় করা প্রতিচ্ছবি দেখতে পায়। ছবিতে ইলেকট্রিক বাল্বটির সাথে তার জুড়ে, লোকটা বোঝাতে চায়ছে সাবধানতা অবলম্বন না করলে বিপদ হতে পারে।

এই থেকে বোঝা যায় প্রাচীন ইজিপ্টের লোকেরা বিদ্যুৎ এর ব্যবহার জানত এবং ইজিপ্টের লোকেরা বৈদ্যুতিক বাল্বের ব্যবহার মূলত রাত্রিবেলা পিরামিড বানানোর কাজে ব্যবহার করতো।

ফ্যারাও খুফুর পিরামিডের রক্ষক বলে মনে করা হয় Sphinx কে, আর এই Sphinx এর মূর্তিটি নির্মাণ করার জন্য আলাদা, আলাদা করে অনেকগুলি পাথর দিয়ে বানানো হয়নি।

Sphinx কে বানানো হয়েছিল শুধুমাত্র একটি মাত্র পাথর দিয়ে। শুনে অবাক হওয়ার কিছু নেই, এটাই সত্য। আর সেই জন্য Sphinx হল গগ্রীনিচ রেকর্ডে পৃথিবীর সবথেকে বড় একটি মাত্র পাথরের উপর বানানো মূর্তি।

Sphinx সহ পিরামিড গুলি আগে বালিতে ঢাকা পড়েছিল। পরে ইজিপ্ট সরকার এগুলি পরিষ্কার করে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়।

Sphinx এর মূর্তিটিকে যখন বালির চাদর সরিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছিল,তখন প্রত্নতত্ববিদরা অজান্তেই Sphinx এর নিচে ০৩ টি চেম্বারের খোঁজ পায়।

হয়তো এই চেম্বারের ভিতরে নতুন কোনো মিশরের পিরামিডের রহস্যর মত কিছু লুকিয়ে আছে,যা হয়তো আবার কোনোদিন আমাদের সামনে উন্মোচিত হবে।

মিশরের সবথেকে বড়ো পিরামিডের নির্মাণের সময় পিরামিডটির উচ্চতা ছিল প্রায় ৪৮১ ফুট,কিন্তু সময়ের সাথে কালের মারে,ঝড়, বৃষ্টি ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পিরামিডের ২৬ ফুট উচ্চতা হ্রাস পেয়ে যায়।

মিশরের পিরামিডের অজানা রহস্যের মধ্যে একটি রহস্য হল,৩,৮০০ সাল পর্যন্ত পিরামিড মানুষের সৃষ্টি সবথেকে বড়ো স্থাপত্য কর্মের নিদর্শন ছিল, কিন্তু ১৩১১ সালে ৪৮২ ফুট উচ্চতার ইংল্যান্ডের লিঙ্কন গির্জা ঘর তৈরি করা হয়। যার ফলে মানুষের হাতে গড়া উঁচু স্থাপত্য কর্মের শিরোপা চলে যায় লিঙ্কন গির্জা ঘরের কাছে।

দ্বাদংশ শতাব্দীর শেষ দিকে সুলতান আল আজীজ মিশরের পিরামিড ধ্বংস করার চেষ্টা করেন। তিনি তার সেনা বাহিনীর এক হাজারের কাছাকাছি লোককে পিরামিড ভাঙার কাজে লাগিয়ে দেন, প্রায় ০৮ মাস বিরামহীন প্রয়াস করার পর,তারা মাত্র পিরামিডের গা থেকে ০২ টি পাথর খসাতে পেরেছিল। অবশেষে নিরুপায় হয়ে সুলতানকে পিরামিড ভাঙার আশা ত্যাগ করতে হয়।

গিজার পিরামিডের ওজন প্রায় ৫৭ লক্ষ ৫০,০০০ টনের কাছাকাছি। সেই তুলনায় বিশ্বের অন্যতম গগন চুম্বি অট্টলিকা দুবাইয়ের বুর্জ খলিফার ওজন ০৫ লক্ষ টনের মত।

আধুনিক ঐতিহাসিকদের মতে পিরামিড তৈরির জন্য মূলত মিশরের ক্রীতদাস এবং সাজা প্রাপ্ত জেল বন্দি শ্রমিকদের শ্রমের বিনিময়ে নির্মিত হয়েছিল,আর তার জন্য তাদিকে উপযুক্ত পারিশ্রমিক দেওয়া হত।

মিশরের রহস্যময় পিরামিড নির্মাণের জন্য রাজমিস্ত্রি,ইঞ্জিনিয়ার সহ প্রায় ২০,০০০০ শ্রমিক কাজ করেছিল। আর এই পিরামিড নির্মাণে ২০ বছর সময় লেগেছিল।

মিশরের পিরামিড নীল নদের পশ্চিম তটে অবস্থিত। সুবিশাল এই পিরামিড নির্মাণের জন্য ৫০ লক্ষ লাইম স্টোন,৪০০ টন গ্রেনাইট ছাড়া আরো অন্যান্য ৫০,০০০ মোটা পাথর ব্যবহার করা হয়েছিল।

পিরামিড নির্মাণ কার্যে মজবুতি প্রদানের জন্য সুপার এডিসিয়াম মনিটর ব্যবহার হয়েছিল,যাতে করে পাথরগুলি একে অপরের সাথে ভালো ভাবে গা ঘেঁষে লেগে থাকে এবং ভূকম্পের মতো বিপর্যয়ে নষ্ট না হয়।

২০১৩ সালে ইজিপ্টের পুরো তত্ববিদ ব্যাড-আল-জাফাজ এর গুহায় প্যাপিরাসের উপর একটি লেখা পায়। প্রত্নতত্ব বিভাগের মতে এই প্যাপিরাসের লেখ টি খুফুর পিরামিডের যুগের বলে মনে করা হচ্ছে।

এই লেখর তথ্য অনুযায়ী পিরামিড বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় পাথরের যোগান দেওয়া হয়েছিল, ইজিপ্টের তোরা নামের একটি পাথরের খাদান থেকে।

আপনারা যদি কেউ ইজিপ্ট ভ্রমনে যান তাহলে আজও খুফুর আমলের প্যাপিরাসটি,ইজিপ্টের রাজধানী কাইরোর মিউজিয়ামে দেখতে পাবেন।

পরিশেষ

মিশরের পিরামিড রহস্যর সমাধান করা এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়ে ওঠেনি। আধুনিক প্রযুক্তি উন্নত হলেও ইজিপ্ট সরকার চায়না মিশরের পিরামিড রহস্য বিশ্বের কাছে উন্মোচিত হোক।

আর শুধু মাত্র বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণ করে পিরামিডের ভিতরের ছবি ও পিরামিডের ভিতরের মধ্যে লুকানো রহস্যর উন্মোচনও সম্ভব নয়।

আর শুধুমাত্র মিশর কেন কোনো দেশের সরকার চাইবেনা পিরামিডকে ধ্বংস করে পিরামিডের ভিতরের রহস্য উন্মোচিত করতে।

কারণ পিরামিডকে ধ্বংস না করে কিংবা কোনো রকম খনন কার্য না চালিয়ে পিড়ামিডের ভিতরের ছবি ও রহস্য জানা প্রায় অসম্ভব।

তাছাড়া পিরামিডের রহস্য উন্মোচিত হলে,মিশরের পিরামিড রহস্য কে ঘিরে মানুষের মনে যে জিজ্ঞাসা আছে তার অবসান হয়ে যাবে। আর এর ফলে ধীরে ধীরে মিশরের পিরামিড দর্শনের অভিলাষ,

মানুষের মন থেকে মুছে যেতে পারে। আর ইজিপ্ট সরকার কোনোদিন চাইবেনা মিশরের পিরামিড রহস্য উন্মোচন করে তাদের দেশের পর্যটক ব্যবস্থার ক্ষতি করে দেশের আর্থিক ক্ষতি করতে ।

Anuprerona
Anupreronahttps://www.anuperona.com
Read your favourite literature free forever on our blogging platform.
RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments