Saturday, April 20, 2024
Homeকিশোর গল্পবাঘমারি - সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

বাঘমারি – সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

বাঘমারি - সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়

কথা হচ্ছে, যাকে বলে গালগল্প। চার বন্ধু বসেছে আড্ডায়। চিমার ফরেস্টের ডাকবাংলোয়। চারজনে এসেছে পুজোর ছুটি কাটাতে। প্রতি বছরই এই চারজন কোথাও না কোথাও যাবেই। নদীতে, পাহাড়ে, বনে, জঙ্গলে। সব ক’জনেরই পায়ে ডানা বাঁধা। ঘরে মন টেকে না। চারজনেরই বয়স চল্লিশের কোঠায়। চারজনই বড় চাকরি করে। শরীর-স্বাস্থ্য ভালোই। একই স্কুলে চারজন একই ক্লাসে পড়ত। সবই ভালো। একটাই যা গোলমাল—চারজনই বড় বড় কথার মাস্টার। বোলচালের শেষ নেই। এ হাতি মারে তো ও মারে বাঘ। এ আল্পস পাহাড়ে উঠেছে তো ও চড়ে বসে আছে এভারেস্টে। এ কুমিরের লেজ ধরে টেনেছে, তো ও ধরেছে অজগর। রাজা উজির মারায় চারজনই ওস্তাদ। কেউ কারও কাছে হারতে রাজি নয়।

চারজনের নাম হল—অমল, বিমল, কমল, পরিমল।

বেলা চারটে টারটে হবে। দুপুরের খাওয়াটা বেশ টাইট হয়েছে। ডাকবাংলোর চৌকিদার গজানন। তার বউয়ের নাম চম্পা। রান্নার হাত খাসা। এমন মাংস রাঁধে, যেন কথা বলছে। পরোটায় এমন প্যাঁচ মারে আঙুল ঠেকালেই মুচুর মুচুর শব্দ। বিরিয়ানিতে অ্যায়সা দম লাগায়। ঢাকনা খোলা মাত্রই গন্ধে মানুষ আধপাগলা! লুচির সঙ্গে কাবাব অ্যায়সালড়িয়ে দেয়, কেয়াবাত, কেয়াবাত! খাওয়ার পর একঘণ্টা আর বাংলায় বাতচিত করা যায় না স্রেফ উর্দু, মায়সাল্লা, হাল হকিকত, মরহুম, এই সব বুলি অটোমেটিক বেরোতে থাকে।

সকালে বিরাট একটা ওয়াক হয়ে গেছে। বিকেলে আর নো ওয়াকিং। স্রেফ আচ্ছা। শীতটাও জমিয়ে পড়েছে। পাহাড় টাহাড়গুলো সব জবুথবু। অস্ত-সূর্য শীতে কাঁপতে কাঁপতে বনের ওপারে পাহাড়ের আড়ালে জঙ্গলের কম্বলে তাড়াতাড়ি শুতে যাচ্ছে। চম্পা এক রাউন্ড চা দিয়ে গেছে। সন্ধের পর কফি দেবে।

গজানন একুট আগে সাবধান করে দিয়ে গেছে, ‘ঝোরার পাশে নরম বালিতে বাঘের পায়ের ছাপ দেখা গেছে। বাবুরা হুঁশিয়ার। বেশি রাত পর্যন্ত বাইরে বসে বসে ওই যে কী যেন দেখেন আজ। আর দেখবেন না। ওই যে নেচার না কী! বাঘ দেখে ফেললে বিপদ আছে। এটা নাকি মানুষ খায়। আগে একটা এসেছিল, সেটা খুব ভালো ছিল, শুধু ফুলকপি খেত।’

অমল বলল, ‘কী যা-তা বলছ! বাঘ কখনও ফুলকপি খেতে পারে? বাঘ মানুষ খায়।’

অমল বললেই তো বিমল বিনা প্রতিবাদে মেনে নিতে পারে না। বললে, ‘কে বলেছে বাঘ হিংস্র প্রাণী! প্রাণীজগতে মানুষই সবচেয়ে হিংস্র।’

কমল বলল, ‘হতে পারে, তার মানে এই নয় বাঘ গরুর মতো ঘাস খাবে।’

পরিমল বলল, ‘আমি নিজে বাঘকে আলোচালের হবিষ্য খেতে দেখেছি।’

অমল কুঁক কুঁক করে এক রাউন্ড হেসে বলল, ‘তুমি বাঘ দেখেছ। শুধু দেখোনি, সেই বাঘ তোমার সামনে আলোচালের ভাত খেয়েছে, ডালভাতে আর কাঁচকলা দিয়ে! গাঁজাখুরি গল্প আমি সহ্য করতে পারি না।’

‘এই দেখো, সত্যি কথাটাকে তোমরা মিথ্যে ভাবছ। আমি যদি যুক্তি-তর্ক দিয়ে বোঝাতে পারি তাহলে মানবে তো!’

‘এর আবার যুক্তি-তর্ক কী! বাঘ মাংস খায়। শ্রীচৈতন্যের আমলেও খেত, আজও খায়।’ ‘আমি যে-বাঘটার কথা বলছি, সেটা ছিল বিধবা বাঘিনী। কপুরথালার মহারাজার গুলিতে তার স্বামী মারা গিয়েছিল। আমি যে সময়ের কথা বলছি, সেই সময় এদেশের বিধবারা মাছ-মাংস খেত না। এর ওপর আর কোনও কথা চলে?’

গজানন বললে—’না, চলে না। বিধবা হলে মাছ-মাংস খাবে কী করে! আমার মা বিধবা, আমি জানি।’

‘তুমি সব জানো! বাঘের আবার বিধবা-সধবা কী! বাঘ কি টোপর মাথায় দিয়ে বিয়ে করে!’

অমল রেগে গেছে! গজানন চলে গেল। রাতের রান্নার জোগাড় দিতে হবে। বাবুরা ভালো-মন্দ খায় আর খুব খায়। গজানন চলে যাওয়ার পর অমল বললে, ‘বাঘ তোমরা সেভাবে কেউ দেখোনি, আমি যেভাবে দেখেছি। আমি নেলকাটার দিয়ে বাঘের নখ কেটেছি।’

পরিমল বলল, ‘কেন, তোমার কি সেলুন ছিল!’

‘ঝট করে, একটা কমেন্ট করলে! আসল কথাটা শুনলে না! আমার দাদু ছিলেন মস্ত ডাক্তার। দিশেরগড় রাজ স্টেটের চিফ মেডিকেল অফিসার হয়ে গেলেন। আমরাও গেলুম। মহারাজা খুশি হয়ে দাদুকে একটা বাঘের বাচ্চা উপহার দিলেন। বেশ হৃষ্টপুষ্ট একটা বেড়াল বাচ্চার মতো। হবে না কেন! বেড়াল তো বাঘেরই মাসি। কী তার ওজন! হাসি হাসি মুখ।’

‘গায়ে বোটকা গন্ধ ছিল না?’

‘বোটকা গন্ধ থাকবে কেন! মহারাজার বাঘ। রোজ চান করে, আতর মাখে।’

‘বাঘটা যখন বড় হল, তখন কি একে একে সব খেয়ে ফেললে! তোমার দাদুকে, দিদাকে, তোমাকে!’

‘আজ্ঞে না! একটা কথা জেনে রাখো, বাঘের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করলে বাঘও তোমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবে না। বাঘ মানুষ নয়।’

‘তা বাঘটা বড় হল, না বনসাই গাছের মতো চিরকাল ছোটই রয়ে গেল?’

‘রীতিমতো বড় হল। আমরা ভাইয়েরা সেই বাঘের পিঠে চেপে বাগানে ঘুরতুম।’

‘তারপরে চেপেই রইলে, চেপেই রইলে, কারণ শুনেছি, বাঘের পিঠে চাপলে আর নামা যায় না।’

‘ওটা একটা ইংরেজি প্রবাদ, রাইডিং এ টাইগার। ওটার সঙ্গে এটার কোনও সম্পর্ক নেই। বাঘটা ছিল ইংরেজদের মতোই, ম্যানারস আর এটিকেট জানা ভদ্রলোক। রাতে বিছানায় আমাদের পায়ের কাছে ঘুমোত। সকালে উঠে টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত মাজত।’

‘খবরের কাগজ পড়ত?

‘ইয়ারকি কোরো না, এইরকম সিভিলাইজড বাঘ আমি আর দুটো দেখিনি।’

‘কী করে দেখবে ওটা তো বাঘ ছিল না, ব্যাঘ্রচর্মাবৃত মানুষ ছিল।’

বিমল বলল, ‘শেষ পর্যন্ত বাঘটার কী হল? মানুষ হয়ে গেল?’

‘দাদু দিশেরগড় থেকে চলে আসার সময় বাঘটাকে অনেক দামে একটা সার্কাস কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিয়ে সেই টাকায় একটা জাগুয়ার গাড়ি কিনেছিলেন।’

বিমল বললে, ‘আমার সঙ্গে একবার একটা বাঘের মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয়েছিল।’

পরিমল বলল, ‘তাহলে, আসল বিমলটা গেল কোথায়?’

‘ঠিক বুঝলুম না!’

‘যে-বিমলের সঙ্গে বাঘের দেখা হয়েছিল, সে তো বাঘের পেটে গেছে।’

‘বাঘটা খুব অন্যমনস্ক ছিল, আমাকে গ্রাহ্যই করেনি, আমিও বাঘ বলে চিনতে পারিনি। আর চিনতে পারিনি বলেই বাঘটা আমার সঙ্গে বাঘের মতো ব্যবহার করেনি।’

‘কোথায় দেখা হল! ময়দানে?’

‘ঘটনাটা ঘটেছিল মান্দার হিলে। বিকেলে বেড়াতে বেরিয়েছি। হাঁটছি, হাঁটছি। হাঁটতে হাঁটতে ফলুনদীর ওপর লম্বা একটা ব্রিজে এসে গেছি। দেখি কী উলটো দিক থেকে আসছে। বেশ হেলতে-দুলতে। সূর্য ডুবছে। নদীর বালি চিকচিক করছে। গাছপালার মাথায় শেষবেলার রোদ। আমি ভেবেছি, একটা কুকুর। জলবায়ু ভালো। মানুষ চেঞ্জে আসে। হতেই পারে। স্বাস্থ্যবান। কুকুর! ব্রিজের শেষ মাথায় তিন-চারজন লোক, হাতে লাঠি। আসছে। আমাকে জিগ্যেস করছে, দেখা, ইধার কোই শের গিয়া! এক শের নিকলা। সঙ্গে সঙ্গে ধরেছি, ওটা স্বাস্থ্যবান কুকুর নয়, বড় একটা বাঘ! মার দৌড়। দৌড়োতে দৌড়োতে সোজা গয়ায়। একটা দোকানে ঢুকেই এক সের। প্যাঁড়া খেয়ে ফেললুম।’

‘কতটা বেশি হল জানি না। তবে অনেকটাই কাটতে হবে। মান্দার হিল থেকে দৌড়ে গয়া যাওয়া যায় না, দুনম্বর, এক সের প্যাঁড়া খেলে মানুষ মারা যায়।’

‘মান্দার হিলে এক সের কেন তিন সের হজম হয়ে যাবে। জলের গুণ। পাথর খেলে পাথর হজম। একজন ফলঅলা বাইচান্স একটা বাটখারা খেয়ে ফেলেছিল। তিন-চার গেলাস জল খেতেই বিলকুল হজম।’

‘ফল থাকতে বাটখারা খেল কেন?’

‘কম ওজনের বাটখারা ছিল, ওয়েটস অ্যান্ড মেজারসের লোক ধরতে এসেছিল, বাটখারাটা স্রেফ গিলে ফেললে। ইনস্পেকটার বোকা বনে চলে গেল।’

পরিমল বলল, ‘তোমরা বাঘ শিকার করেছ কোনও দিন? আমি করেছি কুমায়ুন ফরেস্টে ইন দি ইয়ার নাইনটিন সেভেনটি টু। সে একটা থ্রিলিং ব্যাপার। আমি এখানে বাঘটাদশহাত দূরে। দুজনে মুখোমুখি। চোখে চোখে তাকিয়ে আছি। বাঘটা আমাকে দেখে জিভ বের করে ঠোঁট চাটছে। ভাবছে, কোন দিক থেকে খাবে!’

‘বাঘ সজনে ডাঁটা খায়?

‘মানে?’

‘মানে, তোমার যা চেহারা! অনেকটা ডাঁটার মতো।’

‘বাঘ সম্বন্ধে তোমাদের কোনও জ্ঞান নেই। বাঘ হাড় হাড় চেহারার মানুষ খুব পছন্দ করে। ওই যাকে বলে হাড়ে-মাসে। বাঘটাকে আমার মারার কোনও ইচ্ছেই ছিল না। ওর ফচকেমি দেখে রাগ ধরে গেল। একটা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যের ভাব। বললুম, ইয়ারকি হচ্ছে! একটা মাত্র গুলি, কপালের মাঝখানে। মেরেই বললুম, সরি। বাঘটা, থ্যাঙ্ক ইউ, বলে শুয়ে পড়ল।

‘তাহলে সেই বাঘের ছালটা কী হল?’

অমল বলল—’কেন! ওটা শ্রীমহাদেবকে দুর্গাপুজোর সময় দিয়ে দিয়েছে। বাবা তো কৈলাসে ইদানীং ওইটা পরেই ঘুরছেন!’

পরিমল রেগে গিয়ে বললে, ‘তোমাদের চরিত্রের একটাই দোষ, কোনও কিছু বিশ্বাস করতে চাও না। বাঘ মারাটা এমন কিছু কঠিন কাজ নয়। যে কলকাতার রাস্তায় গাড়ি চালাতে পারে সে বাঘও মারতে পারে। দুটোর জন্যেই প্রয়োজন সাহস আর প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব।’

‘শেষের শব্দটা কী বললে! ওটা শুনলেই বাঘ সেন্সলেস হয়ে যাবে। মুখে বাঘ সব বাঙালিই মারতে পারে। সত্যি বাঘ এলে কী হবে, বলা শক্ত।’

‘দুঃখ একটাই, সত্যি বাঘের দর্শন মেলে না।’

বাইরে থকথকে অন্ধকার। গাছের পাতায় বাতাসের ঝুপুর ঝাপুর শব্দ। হঠাৎ দূরে খুব একটা হইহই শোনা গেল। সঙ্গে টিন, ক্যানেস্তারা পেটানোর শব্দ।

অমল বলল, ‘আজ মনে হয় ট্রাইব্যালদের কোনও উৎসব আছে।’

পরিমল বলল, ‘আমার সন্দেহ অন্য, এ তোমার গিয়ে বাঘ তাড়ানোর শব্দ।’

বিমল বললে, ‘হাতিও হতে পারে। বুনো হাতিরা বহুত অত্যাচারী।’

কথাটা শেষ হয়েছে কি হয়নি, চারজনের মাথার ওপর দিয়ে বিশাল একটা কী জাম্প করে খোলা দরজা দিয়ে সোজা ঘরে। সেখানে যা কিছু ছিল সব দুদ্দাড় করে পড়ে গেল। বিশ্রী একটা বোটকা গন্ধ।

চারজনেই একটা কিছু বলার চেষ্টা করছে, ভয়ে বাক্য সরছে না, বা বাবা। সত্যিই বাঘ! বাঘটা নিজেকে একটু সামলে-সুমলে বেশ রাজকীয় ভঙ্গিতে দরজার সামনে এসে বসল। হাঁড়ির মতো গম্ভীর মুখ। চোখ দুটো জ্বলছে। লেজটা পেছন দিকে অনেক দূর চলে গেছে। প্রায় খাট পর্যন্ত। বাঘটা যেন পর্যবেক্ষণ করছে। চারটের মধ্যে কোনটাকে খাওয়া যায়! অমলই সবচেয়ে লোভনীয়। বেশ মোটাসোটা। রেওয়াজি শরীর। চারজনেই স্থাণু হয়ে গেছে। শরীর পাথরের মতো ভারী। চোখ বুজিয়ে চারজনেই সরু মোটা সুরে মন্ত্রোচ্চারণের মতো বলে চলেছে—’বা বা বা বা।’

লাঠি, সড়কি, বল্লম নিয়ে দলটা বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে। দৃশ্য দেখে থমকে গেছে। বাঘটা যেন টেরোরিস্ট। বাবু চারজন তার হোস্টেজ। ভাবটা এই—হয় আমাকে যেতে দাও, নয় তো এই চারটেকে চিবোই। দু-পক্ষই থমকে আছে। কী হয়, কী হয়! বাঘটা একটু এগিয়ে এসে অমলের চেয়ার ঘেঁষে কুকুরের মতো বসল।

সাহস বটে চম্পার। রান্নাঘরে তিন কেজি মাংস মশলা মাখিয়ে রেখেছিল। চাঁপ তৈরি করবে বলে। সেই থালাটা নিয়ে, একেবারে বাঘের সামনে। বাঘটা যেন তার বনবাসী ছেলে,

‘খোকা! তুই এসেছিস বাবা?’

বাঘটা যেন হাসল। খুশিতে লেজ নাড়াতেই ঘরের ভেতরের সেন্টার টেবিলটা দেশলাইয়ের খোলের মতো ছিটকে এধার থেকে ওধারে চলে গেল।

চম্পা বলছে, ‘ওরে আমার সোনা! কত দিন ভালোমন্দ খাওয়া হয়নি। গরু, ছাগল, মোষ খেয়ে খেয়ে অরুচি হয়ে গেছে। এই নাও, কাবাব খাও!’

বাঘের সামনে থালাটা রাখতেই সব চেটেপুটে সাফ। ঝাল লেগেছে।

চম্পা বলল, ‘এইবার কী একটু দুদু খাবে! না, মাংসের সঙ্গে দুধ খায় না। বদহজম হবে। জল খাও। বাবুদের জন্যে ফোঁটানো জল আছে ক্লোরিন দেওয়া, সেই জল খাও।’

গজানন এক গামলা জল নিয়ে এল। বাঘ চকচক করে পুরো জলটা খেয়ে বিশাল একটা হাই। তুলল। চম্পা বলল, ‘বুঝেছি বুঝেছি, সোনার আমার ঘুম পেয়েছে। আজ আর বনে-জঙ্গলে শুয়ে কাজ নেই, যাও বাবুদের খাটে গিয়ে শুয়ে পড়ো।’

বাঘটা কী বুঝল কে জানে, সত্যি সত্যিই একটা খাটে উঠে শুয়ে পড়ল। চম্পা বাইরে থেকে দরজাটা টেনে বন্ধ করে দিল। তাকিয়ে দেখল, বাবু চারজন প্রায় অজ্ঞান।

‘এই বাবু।’

ঘড়িতে দম দিলে টিক টিক শব্দ। বাবু চারজন সেইরকম আবার শুরু করল, বাবা, বাবা!

‘ঘ লাগাও, ঘ। বাবা নয়, বাঘ, বাঘ।‘

অমল উঠে দাঁড়াল। ট্রাউজারটা ঢিলে হয়ে কোমরের নীচে ঝুলে গেল।

‘এ কী, আমার ভুঁড়ি! আমার ভুঁড়িটা কোথায় গেল!’

‘চুপসে গেছে বাবু!’

‘এতকাল যোগাসনে যা হয়নি!

বিমল বলল, ‘রাতে আমরা কোথায় থাকব?’

ভি.আই.পি. এলে সাধারণ মানুষকে বাংলো ছেড়ে দিতে হয়। আজ আপনারা জঙ্গলে থাকবেন।’ গজানন বলল—’ওই যে কী দেখেন আপনারা সেইসব দেখবেন, নেচার।’

Anuprerona
Anupreronahttps://www.anuperona.com
Read your favourite literature free forever on our blogging platform.
RELATED ARTICLES

Most Popular

Recent Comments